April 26, 2024, 11:32 pm
সর্বশেষ:

সিলেট পাসপোর্ট অফিস যেন দুর্নীতির আখড়া

  • Last update: Tuesday, August 24, 2021

সিলেট পাসপোর্ট অফিস আর দুর্নীতি যেন সমার্থক শব্দ। একটি বলতে আরেকটি বুঝায়। পাসপোর্টের ফাইল জমা দেয়া, ভূল সংশোধন সব জায়গায়তেই ভোগান্তি। দালালদের দৌরাত্ম তো আছেই। সব মিলিয়ে সিলেট পাসপোর্ট অফিস যেন দুর্নীতির আখড়া।

জানা যায়, সিলেট পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম চরম। সত্যায়িত করার সিলসহ সবই আছে দালালদের কাছে। দরকার শুধু টাকা। দালালদের কাছে পকেট ভর্তি টাকা দিলেই নিমিষে হয়ে যায় কাজ। না হয়- ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়েও ফাইল জমা দেওয়া যায় না। নিয়মানুসারে আবেদন করে মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও পাওয়া যায় না পাসপোর্ট। প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় সিলেটে পাসর্পোট অফিসে দালালদের ব্যবসাও রমরমা। প্রবাস ফেরত নাগরিকরা জামেলা করতে চান না, তাই দালালরা যাই বলে তাই করতে বাধ্য হন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই দিন পাসপোর্ট এসে ফিরে যেতে হয়েছে বালাগঞ্জের সালেহ আহমদকে। সকাল ৯টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যা ৭টা ফিরতে হয়েছে বাড়িতে।কিন্তু যে কাজের জন্য এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেই কাজটি হয়নি।তৃতীয় দিন রোববার দুপুর পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এভাবে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আবেদন জমা দিচ্ছেন শতশত নারী, পুরুষ।

আলা উদ্দিন নামে আরেকজন বলেন, সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। প্রথমে গেইটের বাইরে প্রায় ১ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি। পরে গেইট খুলে দিলে ফাইল চেক আপ, রোহিঙ্গা পরীক্ষা দিতেও আরো ২ ঘন্টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি। পাসপোর্ট জমাদানকারীরা বলছেন, এখানে জনবল সংকট। প্রতিটি লাইনে ৪০০-৫০০ জন লোক দাঁড়িয়ে আছেন কিন্তু তাদেরকে মাত্র এক জন লোক সেবা দিচ্ছেন। যার কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়াতে হয়।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ৫০০টাকা-১০০০টাকা দিয়ে লাইনে না দাঁড়িয়ে টেস্ট করাতে পুলিশ লাইনে থাকা মানুষকে অফার করে।আমাকেও অফার করা হয়েছিল।কিন্তু আমার সিরিয়াল চলে আসা আমি আর টাকা দেইনি।

সূত্র জানা যায়, পাসপোর্ট অফিসে সরাসরি ফাইল জমা দেয়া যায় না। নানা অজুহাতে ফাইল ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ভূল না থাকা স্বত্ত্বেও ভূলের অজুহাতে ফাইল ফিরিয়ে দেওয়া চেকআপ সেক্টর থেকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ট্রাভেল ব্যবসায়ী বলছেন, কতিপয় ট্রাভেল এজেন্টদের সাথে আঁতাত করায় পাসপোর্ট অফিসে সরাসরি ফাইল জমা দেয়া যায় না। ওই সব এজেন্টদের কোড ফাইলের উপর লেখা না থাকলে, ফাইল ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যার ফলে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ট্রাভেল ব্যবসায়ীরাও ভোগান্তিতে পড়েন। ধরনা দিতে হয় ট্রাভেল এজেন্টদের কাছে।

এদিকে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় গেল ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সিলেট পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানের পর দুদক জানায়- সিলেটে কতিপয় ট্রাভেলস ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে দালাল চক্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। এছাড়াও নানা দুর্নীতির প্রমাণ পায় দুদক। এরপরও থেমে নেই পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

এব্যাপারে জানতে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক এ কে এম মাজহারুল ইসলামের মোবাইলে কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ
© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC