April 27, 2024, 12:28 am
সর্বশেষ:

বোরকা পরে বাদাম বিক্রি করছেন লতা রায়

  • Last update: Monday, March 15, 2021

কুড়ি বছরের লতা রায়। মেধাবী এই মেয়েটি এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসিতে পেয়েছেন এ প্লাস। নীলফামারী সরকারি কলেজের ছাত্রী লতা। তার প্রচণ্ড মাথা ব্যথা ও যন্ত্রণা। অর্থের অভাবে নিজের চিকিৎসাও করাতে পারছেন না লতা।

লতার বয়স যখন সাড়ে ৪ বছর তখন তার মা ভানুমতি রায় মারা যান। বাবা জগন্দ্র রায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন জয়শ্রী রানী রায়কে। সেই ঘরে রয়েছে হিমন রায় নামের ১৫ বছরের ছেলে। সংসারে অভাব-অনটন থাকায় এখন লতা রায়ের বাবা ঢাকায় ইটভাটাতে শ্রমিকের কাজ করছেন।

নীলফামারী জেলা সদরের গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ডারারপাড় নিজপাড়া গ্রামের মেয়ে লতা রায়কে বিমাতার সংসারে অত্যাচার সহ্য করে থাকতে হচ্ছে। তার স্বপ্ন একজন চিকিৎসক হবেন। তাই নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের লেখাপড়ার অর্থ জুগিয়েছেন এতদিন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসিতে এ প্লাস পেয়ে তিনি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন। আগামী এপ্রিল মাসেই মেডিকেলে সুযোগ পাওয়ার লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন লতা রায়। কিন্তু বাবার অভাবী সংসারে অর্থ জোগাতে লতা রায় রাস্তায় নেমেছে বাদাম বিক্রি করতে। লোকচক্ষুর আড়ালে বাদাম বিক্রিতে নেমে তাকে পরিধান করতে হয় বোরকা।

লতা রায় জানান, বিশ্বাস, আশা ও ভালোবাসা জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বিশ্বাসী, আশাবাদী, ভালোবাসায় পরিপূর্ণ মানুষ ব্যর্থ হয় না এবং হতাশাগ্রস্তও হয় না। হতাশা আসে ব্যর্থতার গ্লানি থেকে। সাধারণত মানুষ প্রাপ্তিতে তৃপ্ত ও অপ্রাপ্তিতে অতৃপ্ত হয়। তাৎক্ষণিক লাভ-ক্ষতিকে মানুষ সফলতা ও ব্যর্থতার মানদণ্ড মনে করে এবং সেভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। তাই আমি নিজের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে বাদাম বিক্রি করতে রাস্তায় নামতে বাধ্য হই।

তিনি বলেন, নীলফামারী শহরে এসে বাদাম বিক্রি করতাম; যা লাভ হতো তা খারাপ ছিল না।

লতা রায়ের বাদাম বিক্রির বিষয়সহ তার পারিবারিক অবস্থা স্থানীয় সাংবাদিকরা জানতে পারেন। বিষয়টি অবগত করা হয় নীলফামারী সদর আসনের সংসদ সদস্য সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে। তিনি ঢাকায় থাকায় বিষয়টি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ রহমান ও জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান পল্লবীকে রোববার বিকালে লতার বাড়িতে প্রেরণ করেন। সেখানে আসাদুজ্জামান নূর মোবাইলে লতার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন এবং তার মাথার ব্যথার চিকিৎসাসহ লেখাপড়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পাশাপাশি তাৎক্ষণিকভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় লতা রায়কে।

দ্রুততার সঙ্গে লতা রায়ের এমন দায়দায়িত্ব গ্রহণ করা প্রসঙ্গে লতা বলেন, একটি বড় হতাশা থেকে মুক্তি পেলাম। আমাদের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর আমার সব দায়দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। আপনারা আমার জন্য প্রার্থনা করবেন আমি যেন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে একজন চিকিৎসক হতে পারি। চিকিৎসক হতে পারলে এলাকার গরিব-দুঃখী মানুষের চিকিৎসাসেবা দিতে পারব।

উৎসঃ যুগান্তর

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC