April 27, 2024, 10:13 am
সর্বশেষ:

প্রয়োজনে আমিরাত সরকারের সহযোগিতা নিন

  • Last update: Wednesday, September 22, 2021

দেশে শ্রমিক সংগঠনগুলো খুবই ঐক্যবদ্ধ। বিশেষ করে গাড়ির শ্রমিক ইউনিয়ন বেশি ঐক্যবদ্ধ। মাঝেমধ্যে দেখা যায়, দেশের যেকোনো প্রান্তে কোন অঘটন ঘটলে সকল শ্রমিক একাট্টা হয়ে কর্মসূচি পালন করেন। তারা তাদের দাবি আদায়ে বেশ সোচ্চার। শ্রম অধিকার আদায়ে সারা বিশ্বে অনেক ইতিহাস রয়েছে। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের ম্যাসাকারের ফলপ্রসূ পহেলা মে বা শ্রমিক দিবস।

একজন সাধারণ প্রবাসী হিসেবে শ্রম ও শ্রমের মর্যাদা পাশাপাশি শ্রমের ফলাফল নিয়ে বেশ সচেতন। শ্রম নিজের মন ও শরীরের সমন্বয়ে ঘটে, শ্রমের মর্যাদা মনুষ্যত্ব থেকে আসে, ফলাফল পুরো জাতি ভোগ করে। তবে প্রবাসীদের সমস্যায় তেমন কাউকেই কাছে পাওয়া যাচ্ছে না। দেশে আটকা পড়া ৫০ হাজার প্রবাসীর সঙ্গে আমরাও দুঃখ অনুভব করছি। আর সেই একতা, ভালোবাসা ও দুঃখ থেকে আজকের এই লেখা।

এবার আসি মূল কথায়। ১৩ মে থেকে ফ্লাইট বন্ধ থাকায় ছুটিতে দেশে গিয়ে আটকা পড়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী কয়েক হাজার বাংলাদেশি। গত ৩০ আগস্ট ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিলেও আমিরাত শর্ত দিয়েছে ফ্লাইটের ৬ ঘন্টার মধ্যে বিমানবন্দর থেকে র‌্যাপিড পিসিআর টেষ্ট করে করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসতে হবে। এতেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান মাত্র এক সপ্তাহে আমিরাতের চাওয়া পূরণ করে প্রবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু করেছে এক মাস পূর্বে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো ল্যাব স্থাপন সম্ভব হয়নি।

প্রবাসীরা ইতোমধ্যে মানববন্ধন, অনশন, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেও বিমানবন্দরে রেপিড পিসিআর ল্যাব স্থাপন করাতে পারেনি।

গেল বছর একাধিক সংবাদপত্রে পড়েছি খিচুড়ি রান্না ও পরিবেশন শিখতে ১ হাজার সরকারি কর্মকর্তা বিদেশ যাওয়ার প্রস্তাব। আমরা ২০১৯ সালে পুকুর ও খাল খনন শিখতে শতাধিক সরকারি কর্মকর্তা বিদেশ যাওয়ার খবর পড়েছি। এছাড়াও বর্তমানে আমাদের নির্বাচন কমিশনার জার্মানিতে রয়েছেন নির্বাচন পদ্ধতি শিখতে।

খিচুড়ি শিখতে যদি হাজার কর্মকর্তা বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা হয়, পুকুর খনন করতে শতাধিক কর্মকর্তা প্রেরণ করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে দেশে আটকে পড়া আমিরাত প্রবাসীদের কাজ বাঁচাতে বিমানবন্দরে রেপিড পিসিআর ল্যাব স্থাপন শিখতে ৫ জন কর্মকর্তা পার্শ্ববর্তী দেশ শ্রীলঙ্কায় পাঠানো যেত না?

দেশে আটকা পড়া ৫০ হাজার প্রবাসীর সঙ্গে তাদের পারিবারের ভাগ্য সম্পৃক্ত। প্রবাসীরা মাস দুয়েক দেশে থাকার পর কি পরিমাণ অর্থাভাব দেখা দেয় একজন ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝবে না। আরব আমিরাত থেকে কোম্পানিগুলো কর্মীদের ফেরত আসার জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছে। অনেকের আবার ভিসার মেয়াদও চলে গেছে।

ফ্লাইট চালু না হলে চাকুরী হারানোর ভয়ের পাশাপাশি দেশের এহেন কার্যকলাপে প্রবাসীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। সামান্য এক ল্যাব (একটি রাষ্ট্রের জন্য অবশ্যই সামান্য) বসাতে এতো দিন লাগবে কেন? প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকেও অসম্মান করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ ল্যাব ইস্যুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা প্রকাশ পাচ্ছে;যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। গণমাধ্যমে প্রতিদিন সংবাদ হচ্ছে, প্রবাসীদের কান্নার ছবি শিরোনাম হচ্ছে তবুও কেন সূরাহ হচ্ছে না?

এখনো সময় আছে বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব না হলে আমিরাত সরকারের সহযোগিতা গ্রহণ করা যায়। শ্রীলঙ্কা বা ভারত সফর করেও জটিলতা দূর করা সম্ভব হতে পারে।

আব্দুল্লাহ আল শাহীন
সাংগঠনিক সম্পাদক
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ
© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC