May 7, 2024, 10:23 pm
সর্বশেষ:
সাতকানিয়ার রাজিয়া হত্যার প্রধান আসামী ফারুখ র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার মৌলভীবাজার আদালত প্রাঙ্গণে “ন্যায়কুঞ্জ” উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি আন্তর্জাতিক শ্রম দিবসে বাঁশখালী লবন শ্রমিক কল্যান ইউনিয়নের আলোচনা সভা ও র‌্যালী আন্তর্জাতিক শ্রম দিবসে বাঁশখালীতে রিক্সা শ্রমিকদের আলোচনা সভা ও র‌্যালী রেকর্ড ভেঙ্গে সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় সোনারগাঁয়ে বেপরোয়া মহিউদ্দিন পেপার মিলস, বিলিং ঘর ধসে পড়ে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি আলফাডাঙ্গায় বৃষ্টির আশায় ইসতিসকার নামাজ আদায় বান্দরবানের ট্রাস্ট ব্যাংকের পাশে আগুন,পুড়ে ছাই দোকান ও বসতঘর           শ্রীমঙ্গল মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ বাজারে ধানের দাম কম, শ্রমিকের মজুরি বেশি

পাপুল কাণ্ডঃ নাম উঠে আসছে কুয়েতের এমপি, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের

  • Last update: Tuesday, June 16, 2020

কুয়েতের ইতিহাসে মানবপাচার বিষয়ক সর্ববৃহৎ এবং চাঞ্চল্যকর মামলা থেকে নিজেকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বাংলাদেশি এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। রিমাণ্ডে তিনি নিজেকে বরাবরের মতো নির্দোষ দাবি করেছেন। এ-ও বলেছেন, তিনি ব্যবসা করেছেন, পাচার নয়। আর তার এ ব্যবসায় বাংলাদেশ এবং কুয়েতের অনেককের হিস্যা আছে। তিনি কেবল তা আদায় করেছেন। নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টায় তিনি শেষ পর্যন্ত তার কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ নেয়া দেশি-বিদেশি অনেকের নাম বলে দিয়েছেন। এ পর্যন্ত কুয়েতের ৩ জন এমপি এবং ৭ জন কর্মকর্তার নাম প্রকাশ পেয়েছে। পাপুলের স্টেটম্যান্টে কুয়েতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে।

করোনাকালেও সচল কুয়েতি পার্লামেন্টে পাপুলকাণ্ড নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে। অন্তত অর্ধডজন এমপি এ নিয়ে কথা বলেছেন। তারা সব নাম জনসমক্ষে প্রকাশের জোর দাবি করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র ও কেবিনেটের দায়িত্বে থাকা কুয়েতের উপ-প্রধানমন্ত্রী আনাস আল সালেহ বিবৃতি দিয়েছেন। আশ্বস্ত করেছেন বিশিষ্টজন অর্থাৎ এমপি-মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, আমলা-কামলা যার নামই পাপুলের মুখ থেকে আসুক না কেন, কেউ আইনের আওতার বাইরে থাকবে না। মানবপাচার, অর্থপাচার ও ভিসা বাণিজ্য এশিয়ান এমপি অর্থাৎ পাপুলের কমাণ্ডে থাকা তার কুয়েতি সহযোগীদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যানুসন্ধান এবং তার দাবির সত্যতা যাচাইয়ে দেশটির এন্টি করাপশন কমিশনে একটি স্বতন্ত্র সেল গঠন করা হয়েছে। তারা বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেবে এবং দালিলিক প্রমাণ হাজির করবে প্রসিকিউশনে। সূত্রের দাবি, পাপুল বাংলাদেশ থেকে কিভাবে শ্রমিক পাচার করেছেন? কোথায় কিভাবে অর্থ সরিয়েছেন? কুয়েত, গাল্ফ এবং ইউরোপ-আমেরিকায় তার কত সম্পদ রয়েছেন? তার হিসাব আগেই দিয়েছেন। শুরুর দিকে তিনি সব অস্বীকার করার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু ভিকটিম-শ্রমিক, স্টাফ এবং তার অপকর্মের পার্টনার মিলে ১২ জনকে মুখোমুখি করার পর তিনি অনেকটা বাধ্য হয়ে তা কবুল করেছেন। শনিবার মধ্যরাত অবধি কুয়েত ও উপসাগরীয় অঞ্চলের (স্থানীয় সময় এবং মিডিয়া) আরবী এবং ইংরেজি ভার্সনের সংবাদ মাধ্যমগুলো সিআইডির বরাতে তা খবর করেছে। সে সময় বলা হয়েছিল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য আসছে। হ্যাঁ, সত্যিই তাই ঘটেছে। সূত্রের খবর রোববার ভোরের আলো ফোটার পর থেকে সন্ধ্যা অবধি অর্থাৎ সপ্তাহব্যাপী রিমান্ডের শেষ দিনে পাপুল রীতিমত বোমা ফাটিয়েছেন। তিনি এ দিনে কুয়েতের কোথায় কত ইনভেস্ট করেছেন? কাকে কত দিয়ে কিনেছেন? সবই বলেছেন তিনি। তবে দাবি করেছেন কাউকেই তিনি ঘুষ হিসাবে কোনো অর্থ দেননি। যা দিয়েছেন তা সবই গিফট! উপহার প্রাপ্তদের তালিকায় কুয়েতের বর্তমান দু’জন পার্লামেন্টারিয়ান এবং একজন সাবেক রয়েছেন। তারা দেশটির রাজনীতি ও প্রশাসনে বেশ প্রভাব রাখেন।

বন্ধুত্বের খাতিরে তাদেরকে মোটা অংকের অর্থ দিয়েছেন এমনটা দাবি করে পাপুল জানান তাদের সঙ্গে তার ফ্রেন্ডশিপ অনেক দিনের। তিনি এ-ও স্বীকার করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ৩ জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে প্রায় দেড় লাখ দিনার দিয়েছেন তিনি, যার প্রত্যেকের ভাগে পড়েছে ৫০ হাজার দিনার করে। পাপুলের দাবি তিনি ব্যবসা করেছেন, লগ্নি করেছন। সবাইকে নিয়েই আমোদ ফূর্তি করে জীবনটা উপভোগ করতে চেয়েছেন। এটাকে তিনি কখনও অপরাধ মনে করেননি। তিনি এ-ও বলেন, দেশে থেকে শ্রমিকদের কুয়েতে নিয়েছেন, কাজ জোগাড় করে দিয়েছেন। তাদের অনেকের ভাগ্য বদল হয়েছে। এতে তিনি লাভবান হয়েছেন। ভাইটাল পয়েন্টে থাকা কুয়েতের লোকজনকেও তিনি মোটামুটি হ্যান্ডসাম এমাউন্ট দিয়েছেন। শস্য দানার মতো ছিটানো তার সেই অর্থ অনেকেই পেয়েছেন। পাপুল নাকী আফসোস করে এ-ও বলেছেন তার সেই ‘বন্ধু’দের বেশিরভাগই তার বিপদের দিনে (গ্রেফতারের পর থেকে এ পর্যন্ত) তার খোঁজ পর্যন্ত নেননি! তবে আদতে তিনি কার সম্পর্কে কি বলেছেন তা এখনও অস্পষ্ট। পাপুল নিয়ে আলোচনায় সম্প্রতিক সময়ে কুয়েতের আপীল আদালতের দু’টি যুগান্তকারী রায়, যাতে একজনের যাবজ্জীবন এবং অন্যজনের ৩ বছরে কারাদণ্ড হয়েছর তা রেফারেন্স হিসাবে আসছে। বলা হচ্ছে তার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলে সাজা নূন্যতম ৩ বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে আদালতের ওপর। সূত্র এটা নিশ্চিত করেছে যে পাপুল এমপি হলেও তার কাছে এখনও গ্রীণ পাসপোর্ট। ফলে এমপি হিসাবে নয়, বরং একজন মানবপাচারকারী বাংলাদেশি নাগরিক হিসাবে তার কেসটি বিবেচনা হচ্ছে। কোনো কূটনৈতিক সুবিধা তিনি পাবেন না।

উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে বহু ভাষায় প্রতিদিন পাপুলনামা প্রচারিত হলেও কুয়েতের বাংলাদেশ মিশনের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা ঢাকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে আজ অবধি কোনো কিছু শেয়ার করেননি। রাষ্ট্রদূত এস এস আবুল কালামের দাবি পাপুল আটকের পর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তিনি নোট ভারবাল পাঠিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। পরে একদিন ফোনও করেছিলেন। কিন্তু তাকে কেউ রিসিভ করেনি। ফলে তিনি কোনো তথ্য পাপনি। আনুষ্ঠানিকভাবে কুয়েত সরকার যতদিন না তাকে কিছু জানাবে ততদিন তিনি ঢাকাকে কিংবা গণমাধ্যমকে কোনো কিছু বলতে পারেন না বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত। তবে অন্তত দু’টি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, পাপুল ইস্যুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের শীর্ষ পর্যায়ের দু’জন কর্মকর্তাকে নজরদারিতে রেখেছে কুয়েত সরকার। তাদের ব্যক্তিগত একাউন্টের তথ্য তালাশ শুরু হয়েছে। কূটনীতিক সুবিধাপ্রাপ্ত (ডিপ্লোমেটিক ইমিউনিটি) হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা হবে না। তবে যে কোনো সময় তাদের প্রত্যাহারে ঢাকাকে অনুরোধ করা হতে পারে।

উৎসঃ মানবজমিন

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC