April 27, 2024, 2:42 am
সর্বশেষ:

কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা গিলানি মারা গেছেন

  • Last update: Thursday, September 2, 2021

কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি আর নেই (ইন্না লিল্লাহে…..রাজেউন)। ৯২ বছর বয়সে শ্রীনগরে নিজের বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। দীর্ঘ রোগভোগের পর তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছে অনলাইন বিবিসি। তাকে ‘স্বাধীনতা যোদ্ধা’ উল্লেখ করে শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আজ পাকিস্তানে জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন তিনি। শোক প্রকাশ করেছেন জম্মু কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। তবে গিলানির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এক রণপ্রস্তুতি নেয়া হয়েছে কাশ্মীরে তার বাড়ির আশপাশে। তার ভক্তরা সহিংসতা ঘটাতে পারেন, এই আশঙ্কায় তার দাফন অনুষ্ঠানে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছাড়া কাউকে উপস্থিত হতে দেয়নি পুলিশ।

বাড়ির চারপাশের রাস্তায় বসিয়েছে কাঁটাতারের বেড়া ও ব্যারিকেড। শ্রীনগরবাসীকে ঘরের বাইরে বের না হতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে পুলিশ। দেয়া হতে পারে কারফিউ।

তিনি কাশ্মীরে ভারতীয় শাসন বিরোধী একজন আন্দোলনকারী। গত ১১ বছরের বেশির ভাগ সময় তাকে রাখা হয়েছিল গৃহবন্দি। রিপোর্টে বলা হচ্ছে, শ্রীনগরের ইন্টারনেট সার্ভিস এবং ভয়েস কল বেশির ভাগ এলাকায় স্থগিত করা হয়েছে। কারফিউও জারি করা হতে পারে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বিবিসি লিখেছে, ভারত শাসিত কাশ্মীরে এই মুহূর্তে যে উত্তেজনা বিরাজ করছে তাতে এমন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অস্বাভাবিক নয়। এসব পদক্ষেপকে পুলিশ বর্ণনা করছে পূর্ব সতর্কতা হিসেবে। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে এবং তা বন্ধ করার জন্য এসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। উল্লেখ্য, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের ভিন্ন ভিন্ন অংশ নিয়ন্ত্রণ করে ভারত ও পাকিস্তান। তবে উভয় দেশই দাবি করে, পুরো কাশ্মীরই তাদের। ভারত শাসিত অংশে ৩০ বছর ধরে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছে। ফলে এ সসময়ে সেখানে সহিংসতাও হয়েছে প্রচুর।

ভারতের দৃষ্টিতে গিলানি একজন বিভক্তি সৃষ্টিকারী ব্যক্তি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, তিনি সব সময়ই কাশ্মীরের স্বাধীনতার কথা বলতেন। তবে কাশ্মীর পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে যাক, এর পক্ষেই তিনি ব্যক্তিগতভাবে ছিলেন। তার মৃত্যুতে ভারতের কাশ্মীরি নেতা এবং পাকিস্তানি রাজনীতিকরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। জম্মু কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেছেন, গিলানির মৃত্যুতে তিনি দুঃখ ভারাক্রান্ত।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাকে একজন ‘স্বাধীনতা যোদ্ধা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং আজ বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে সরকারিভাবে শোক ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, স্বাধীনতাকামী এই নেতা তার সারাটি জীবন জনগণ এবং তাদের আত্ম মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন।
ওদিকে গিলানির দাফন অনুষ্ঠানে শুধু ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের অংশ নিতে দিয়েছে কাশ্মীরের পুলিশ। মৃত্যুর পর গিলানির বাড়ির কাছে বড় মসজিদ থেকে মাইকে তার মৃত্যুর খবর প্রচার করা হয়েছে। এতে স্থানীয় জনগণকে তার বাড়ির দিকে যেতে বলা হয়। কিন্তু ভারতীয় সেনা ও সশস্ত্র যান রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ শহরের নাগরিকদের ঘরের বাইরে বের হতে বারণ করেছে।

কমপক্ষে ১৫ বছর আইন প্রণেতা ছিলেন গিলানি। তিনি জামায়াতে ইসলামীর একজন প্রতিনিধি ছিলেন। ভারতীয় কাশ্মীরে জামায়াতে ইসলামী একটি বড় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠন। ২০১৯ সালে এই দলটিকে নিষিদ্ধ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার। ১৯৬২ সালের পর প্রায় ১০ বছরসহ জীবনের বেশির ভাগ সময় জেলে কাটিয়েছেন গিলানি। তিনি অল পার্টিজ হুরিয়াত কনফারেন্সের একটি অংশের নেতৃত্ব দিতেন। কিন্তু ২০২০ সালে সেখান থেকে ওয়াকআউট করেন বা বেরিয়ে আসেন। অভিযোগ করেন, অন্যরা তার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে।
ভারতের সঙ্গে যেকোনো রকম আলোচনার ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ
© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC