April 26, 2024, 11:13 pm
সর্বশেষ:

আবরার হত্যার আসামি অনলাইন ক্লাসে, প্রতিবাদে মানববন্ধন

  • Last update: Thursday, May 27, 2021

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার আসামি ও ছাত্রলীগ নেতা আশিকুল ইসলাম বিটুর ক্লাসে যোগদানের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিয়ারিং ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আলী আম্মার মুয়ায।

লিখিত বক্তব্য পাঠ কালে তিনি বলেন, ‘স্মারক নম্বর- ডি. এস. ডব্লিউ / ডি-৩৪ অনুযায়ী বিগত ২১ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখে আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন, হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ২৬ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য (স্থায়ীভাবে) বহিষ্কার করে। এদের মধ্যে একজন আশিকুল ইসলাম বিটু (১৬০২০১৬)। বিগত ২২ মে, ২০২১ তারিখে কেমিকৌশল ১৭ ব্যাচের একটি কোর্সের ক্লাসে তাকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। আমরা জানতে পারি ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ তারিখে আশিকুল ইসলাম বিটু তার বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে আদালত হতে স্থগিতাদেশ পায় এবং বুয়েটে তার অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করে। ৪ এপ্রিল, ২০২১ তারিখে বুয়েট কর্তৃপক্ষ আবেদনের সাপেক্ষে আশিকুল ইসলাম বিটুকে ক্লাস করার অনুমতি দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদান ও বুয়েটের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার প্ল্যাটফর্ম মাইক্রোসফট টিমসের সংশ্লিষ্ট কোর্সগুলোতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে তাকে কেমিকৌশল ১৭ ব্যাচের সঙ্গে লেভেল-৩ টার্ম-১ এর অন্তত চারটি কোর্সে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। বুয়েটের অভ্যন্তরীণ তদন্তের ভিত্তিতে আবরার ফাহাদ হত্যা ঘটনায় সম্পৃক্ততা ছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে র‌্যাগিং-নির্যাতনের বহু ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণের অভিযোগ উঠে আসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উল্লিখিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বুয়েটের সব সাধারণ শিক্ষার্থী, আশিকুল ইসলাম বিটুর সঙ্গে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে কোনও শর্তেই ইচ্ছুক নই – এই মর্মে বুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি উত্থাপন করি। এছাড়াও ২৯ মে, ২০২১ তারিখের মধ্যে কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবিগুলো কার্যকর না করলে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থী, ৩০ মে, ২০২১ তারিখ হতে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে বাধ্য হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন যে, আশিকুল ইসলাম বিটুর কোর্স রেজিস্ট্রেশন এখনও সম্পন্ন হয়নি, বিধায় সে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবে না এবং কোর্সগুলোতে তার অন্তর্ভুক্তি বাতিল করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আমাদের এই মর্মে আশ্বাস দিয়েছে, অবিলম্বে আদালতের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, বুয়েট কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিশ্রুতি দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করবে। এর পাশাপাশি আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড বা র‌্যাগিংয়ের মতো ঘৃণ্য অপরাধের জন্য স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত কেউ যেন, কখনও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে ফেরত আসতে না পারে, সে বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ তৎপর থাকবে বলে আশা করি।’

এসময় ২৯ মে, ২০২১ তারিখের মধ্যে বুয়েট কর্তৃপক্ষের গৃহিত পদক্ষেপ সমূহ এবং ভবিষ্যৎ প্রতিশ্রুতি অফিশিয়াল বিবৃতি/নোটিশ আকারে প্রকাশ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।

পরবর্তীতে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা দুটি বিষয় বিবেচনার কথা জানান। বিষয় দুটি হলো, ২৯ মে, ২০২১ তারিখের মধ্যে বুয়েট কর্তৃপক্ষ আদালতের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে। কোনও কারণে এই সময়ের মধ্যে আপিল করতে না পারলে, আপিল করার প্রতিশ্রুতি একটি গ্রহণযোগ্য সময়সীমাসহ অফিসিয়াল বিবৃতি/নোটিশে অন্তর্ভুক্ত করবে। দুটির যেকোনও একটি কার্যকরের পরিপ্রেক্ষিতে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পুনর্বিবেচনা করে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC