আজিজুর রহমান দুলালঃ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নে মধুমতি নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই ভাঙছে নদীর পাড়।আজ সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যেমনঃ বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পশ্চিম চরনারানদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,বুড়াইচ ইউনিয়নের চরখোলা বাড়িয়া আল-হেরা দাখিল মাদ্রাসাসহ আসংখ্যক পাকা রাস্তা, বাড়িঘর, গাছপালা ভেঙে নদীতে বিলীন হচ্ছে।
বাজড়া চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নদী থেকে বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি ১০ ফুট এবং টয়লেট ৫ ফুট দূরে অবস্থান করছে।সাবেক চেয়ারম্যান খান সাইফুল ইসলাম বলেন,দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যেকোন সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলে ছেলে-মেয়েরা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হতে পারে। এদিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা শিক্ষা অফিসের শিক্ষা অফিসারসহ সকলে স্কুলটি পরিদর্শন করেছেন।
পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমীর কুমার সাহা জানান, বর্তমান বিদ্যালয়টি থেকে মাত্র ৩৫ ফুট দূরে অবস্থান করছে মধুমতি নদী। যে কোন সময় পুরান প্রতিষ্ঠানটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।’
পশ্চিম চরনারানদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নদী যে ভাবে ভাঙতে শুরু করেছে, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয়টি ঠেকানো সম্ভব হবে না।আসেপাশের লোকজন আমাদের সময়কে জানান,সরকার এখন যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, এই কাজটি শুকনা মৌসুমে করলে কিছুটা হলেও ভাঙন রোধ করা সম্ভব হতো।
স্থানীয়রা জানান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করলেও নদীতে শ্রোত থাকায় তা কার্যকর হচ্ছে না।
এছাড়াও ৩শ মিটার দুরে রয়েছে চরখোলা বাড়িয়া সরকারী গ্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পার্শবর্তী দিগনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।এ দু’টি বিদ্যালয়ও রয়েছে মধুমতি নদীর হুমকির মুখে।
ঘরবাড়ি হারিয়ে অনেকে খোলা আকাশের নিচে অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছেন। বাড়িঘর হারিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তাদের। কোনো জনপ্রতিনিধি তাদের কোনো খোঁজ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা।
স্থানীয়রা জানান, গত বেশ কিছু ধরে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। অল্প সময়ের মধ্যে গোপালপুর ইউনিয়নের ছাতিয়ারগাতী গ্রামের আকরাম সাহেবের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়ি, গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন যেতে পারে। এছাড়াও গোপালপুর থেকে চরডাঙ্গা গ্রামে যাতায়াতের পাকা সড়কটির ৬০মিটার নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় এ রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে অনেক দিন ধরে।
মধুমতি নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোতে ভাঙন শুরু হয়েছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া নদী ভাঙনে চরম আতঙ্কে রয়েছেন নদীর তীরের বাসিন্দারা।
ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা একাধিক ব্যক্তি জানান, রাস্তা রক্ষায় ও নদীর ভাঙন রোধে কাজ হচ্ছে খুব ধীরগতিতে। ফলে প্রতিনিয়ত ভাঙছে নদীর পাড়। এতে হুমকির মুখে রয়েছে স্কুল, মসজিদ, দোকানপাটসহ অসংখ্য বাড়িঘর। বসতঘর নদীতে বিলীন হলে তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকবে না।