বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই ও উত্তর আমিরাতের উদ্যোগে আগামী ৪ থেকে ৬ নভেম্বর কনস্যুলেট জেনারেল অফিস প্রাঙ্গনে তিনদিনব্যাপি দুবাইয়ে প্রথম বইমেলা ও বঙ্গসংস্কৃতি উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাসে এটিই হবে প্রথম বইমেলা।
মেলার আয়োজন উপলক্ষে ১২ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় দুবাই কনস্যুলেট জেনারেলের হল রুমে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই ও উত্তর আমিরাতের কনস্যুল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে জানাযায়, বইমেলায় স্বনামধন্য শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে । বাংলাদেশের বিভিন্ন সৃজনশীল ও স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থাসহ স্থানীয় প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে । বাংলাদেশ , ভারত , চীন , সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের খ্যাতিম্যান কবি , সাহিত্যিক , লেখক এই বইমেলায় অংশগ্রহণ করবেন ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বিএম খালেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা, বিখ্যাত ব্রিটিশ রাইটার গ্রিমি উইলসন, ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর রাজিব পান্থ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সুচরিতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সমাপনী দিনে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি।
সংবাদ সম্মেলনে দুবাই কনস্যুলেটের কনস্যাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় দশ লক্ষাধিক প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক বসবাস করেন । এই বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীর বাংলা বইয়ের প্রতি আগ্রহ , মধ্যপ্রাচ্যে বাংলা ভাষা , সাহিত্য , সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরা ও জনকূটনীতি সম্প্রসারণের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এই বইমেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে ।
এ মেলায় সরকারের সার্বিক সহযোগিতার থাকছে কি না? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কনস্যুলেটের নিজস্ব উদ্যোগে মেলাটি উদযাপিত হবে। এবং এটি প্রথম উদ্যোগ হলেও পরবর্তী বছর থেকে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিতভাবে দুবাইয়ে বই মেলাটি স্থায়ী রূপ লাভ করবে ।
মেলার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, বইমেলায় প্রতিদিন স্থানীয় ও দেশী – বিদেশী খ্যাতনামা শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি নতুন বইয়র মোড়ক উন্মোচন , বইয়ের আলোচনা , সাহিত্য বিষয়ক সেমিনার, আলোচনাসভাসহ বিভিন্ন সৃজনশীল, শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান ও বাচ্চাদের জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে ।
সৃজনশীলতা বাড়ানোর জন্য গুণী লেখকদের কোনো সম্মাননা বা পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবছর পদক প্রদান না করলেও পরবর্তী বছর থেকে সম্মাননা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। তবে এবছর অন্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পদক প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
মেলায় মোট কয়টি স্টল থাকবে এবং স্টল ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে কি? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেলায় সর্বমোট ৫০ টি স্টল থাকবে এবং স্টল তৈরির বাবদ যা খরচ হবে তাই ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।
এছাড়াও বইয়ের স্টলের পাশাপাশি বাংলাদেশের আবহমান ঐতিহ্য , সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে প্রতিনিধিত্ব করে এমন স্টল থাকবে ।
আগামী ৪ নভেম্বর বিকাল চারটায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিস প্রাঙ্গনে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে জানিয়ে বইমেলার সর্বাধিক প্রচার প্রসার প্রত্যাশা করেন সাংবাদিকদের কাছে এবং ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের কাছে সার্বিকভাবে সহযোগিতা চান কনস্যুলেট জেনারেল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কনস্যুলেটের কর্মকর্তা, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকসহ ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন কমিনিউটির নেতৃবৃন্দ। বইমেলার উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়ে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন উপস্থিত সবাই।