April 25, 2024, 2:38 pm

স্কিনের অয়েলি ভাব দূর করবে এই ১৯টি টিপস

  • Last update: Thursday, July 2, 2020

এমনিতে তৈলাক্ত ত্বক অনেকের বিরক্তির কারণ। তার উপর গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নেওয়াটা আরও একটু বেশি কঠিন। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ তেল আমাদের ত্বকের জন্য জরুরী যা আমাদের ত্বককে স্বাস্থ্যবান রাখে, তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং আমাদের ত্বককে শুষ্ক করার হাত থেকে রক্ষা করে। এই আর্টিকেল প্রচণ্ড গরমে শুধু মুখের ত্বকই নয় মাথার, হাত-পায়ের ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করা
তথা গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন কিভাবে করবেন তার কিছু উপায় ও টিপস দেওয়া হলো।

তৈলাক্ত ত্বকের সুবিধা-অসুবিধা
তৈলাক্ত ত্বকের সুবিধা হল, তেল বলিরেখা ও মুখের রঙের কোন পরিবর্তন হওয়া থেকে রক্ষা করে। কিন্তু তৈলাক্ত ত্বকের অসুবিধাও কম না। তৈলাক্ত ত্বকে খুব সহজে ধূলোবালি আটকে যায় এবং অতিরিক্ত তেল মুখের পোরগুলোকে বন্ধ করে দেয়। এতে করে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে ব্রণ হওয়ার প্রকোপ বাড়ে। তাই বিড়ম্বনার মাত্রা যেন আরও বেড়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে ত্বক পরিষ্কার না রাখায় ব্রণ দেখা দিতে পারে তবে অনেকের ত্বক জন্মগতভাবেই তৈলাক্ত হয়ে থাকে একটুতেই ত্বক তেলতেলে হয়ে যায়। কখনো কখনো দেখা দেয় ব্রণের উপদ্রব। এমন সমস্যা তৈলাক্ত ত্বকে বেশি। তৈলাক্ত ত্বকে লোমকূপ বড় হয়ে যায়। সমস্যা নিয়ে বসে থাকলে তো হবে না। সমাধানও আছে।

গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন কিভাবে করবেন?

মুখের ত্বকের যত্ন

১. তৈলাক্ত ত্বকে লোমকূপ বড় হয়ে যায়। তেল জমে সেসব বন্ধ হয়ে ব্রণও ওঠে। তাই গরমে প্রতিকূল আবহাওয়া থেকে তৈলাক্ত ত্বক রক্ষা করতে হলে প্রতিদিন ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। বাড়িতে বসেই ত্বকের যত্ন নিতে পারেন।

২. শশার রস তৈলাক্ততা দূর করতে খুবই কার্যকর। প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে শশার রস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন।

৩. এ ছাড়া স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে এর সঙ্গে চালের গুঁড়া মিশিয়ে নিলেই হবে। যাদের মধুতে অ্যালার্জি নেই, তারা সামান্য মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন এই মিশ্রণে। সপ্তাহে দুই দিন এই প্যাক ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কার হবে। ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস দূর হয়ে যাবে। খেয়াল রাখতে হবে, ব্রণ থাকলে স্ক্রাব করা যাবে না।

৪. গোলাপ জল, লেবুর রস সমান পরিমাণে নিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে আধ ঘণ্টা মুখে লাগিয়ে রাখুন। আলতো ভাবে তুলো দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন ধীরে ধীরে। এতে ব্রণ এবং ফুসকুড়ির দাগ উধাও হয়ে যাবে।

৫. এক চা চামচ বেসন, অল্প হলুদ গুঁড়ো, টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে লাগাতে হবে এবং আধঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলতে হবে।

মাথার ত্বকের যত্ন
তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের মাথার ত্বকও তেলতেলে হয়। ময়লা জমে বেশি আর চুলের ময়লা থেকে খুশকির প্রবণতা বেড়ে যায়। গ্রীষ্মকালে তেলের তীব্রতা যেন সব বাঁধ ভেঙ্গে দেয়। নিয়মিত যাদের বাইরে বের হতে হয়, তারা প্রতিদিন মৃদু ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। তা না হলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন শ্যাম্পু করা উচিত। অনেক সময় তৈলাক্ত ত্বকের চুলেও রুক্ষতা দেখা দেয়। তখন কন্ডিশনার দিতে পারেন। অন্য সময় এটি ব্যবহার করার দরকার নেই। এ সময়ে যাদের চুল তৈলাক্ত ধরনের তাদের চুল খুব দ্রুতই ময়লা হয়ে যায়।

৬. খুশকির সমস্যার সমাধানের জন্য ঘরেই বসেই একটি প্যাক তৈরি করতে পারেন। সারা রাত মেথি ভিজিয়ে রেখে পরে তা টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাথায় লাগান। কিছুক্ষণ পর চুল ধুয়ে ফেলুন। মাসে একবার এ প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।

৭. সপ্তাহে এক দিন নারিকেল তেলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ভালোভাবে চুলে মালিশ করুন। এরপর তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে চেপে নিয়ে সেটি মাথায় ১০ মিনিট পেঁচিয়ে রাখুন। এতে চুলের গোড়া মজবুত হবে। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন।

৮. চা এর মধ্যে ট্যানিক যুক্ত এক ধরনের কষ জাতীয় পদার্থ আছে যা চুল থেকে অতিরিক্ত তেল দূর করতে সাহায্য করে। একটা টি-ব্যাগ কে কিছুক্ষন কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন অথবা চা চুলায় জ্বাল দিয়েও নিতে পারেন। এবার এটাকে মাথার তালুতে লাগিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। কিছুক্ষন পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

৯. বেকিং সোডা চুলের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সাহায্য করে। দুই টেবিল চামচ বেকিং সোডা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ রেখে চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

১০. ভিনেগার ব্যবহারেও চুলের তৈলাক্ততা কমে যায়। ৩ টেবিল চামুচ ভিনেগার এক কাপ পানিতে মিশিয়ে স্প্রে বোতলে ভরে সম্পূর্ন চুলে স্প্রে করুন। ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এতে চুলের তৈলাক্ত ভাব কমার সাথে সাথে চুল উজ্জ্বল হবে।

হাত-পায়ের যত্ন
১১. শশার রস, গাজরের রস, চালের গুঁড়া, দুধ ও এক চা-চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। সপ্তাহে অন্তত দুইবার হাত-পায়ে ব্যবহার করা যেতে পারে এই প্যাক।

গরমকালে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের আরো কিছু প্যাক
১২. শশার রসের সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার বা লাল আটা মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে প্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এটি মুখে ও গলায় ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে।

১৩. লোমকূপ বড় দেখানোর সমস্যা হলে একটু বাড়তি যত্ন নিতে হবে। এ জন্য ডিমের সাদা অংশ মুখে লাগিয়ে এরপর টিস্যু পেপার চেপে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ধীরে ধীরে টিস্যু পেপার তুলে পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে ফেলুন। ত্বকে টানটান ভাব চলে আসবে।

১৪. নিয়মিত ঘৃতকুমারী (অ্যালোভেরা জেল) দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা যেতে পারে। ত্বকের জন্য এটি অনেক উপকারী।

১৫. রসুনে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-বায়োটিক থাকায় ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করতে রসুনের পেস্ট ব্যবহারও ভালো।

১৬. দুই চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে পরিমাণমতো গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট করে সারা মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

১৭. এক চামচ চন্দন গুঁড়োর সঙ্গে এক চামচ মুলতানি মাটি এবং পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে ১০-১৫ মিনিট রেখে শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন।

১৮. আপেলের রস ও লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

১৯. একটি পাত্রে পানি গরম করে তাতে চা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিন এরপর মুখ গামছা দিয়ে ঢেকে গরম ভাব নিন মুখে ৩ মিনিট।

বাস্তবতা হলো, তৈলাক্ত ত্বকে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। ত্বক সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। দিনে তিনবারের বেশি ফেইসওয়াশ বা ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রসাধনী থেকে শুরু করে ফেইসওয়াশ — সব হতে হবে তেলমুক্ত। তবে গরমে এ ধরনের ত্বকের যেসব সমস্যা হয় সঠিকভাবে পরিষ্কার করলে অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC