ঢাকার বায়তুল মোকাররমে ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনে লাখো আশেকে রাসূলের ঢল

আধ্যাত্মিকতার পুনর্জাগরণে অবিস্মরণীয় কিংবদন্তি খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত গাউছুল আজম (রা.) -মাননীয় মোর্শেদে আজম।

যুগে যুগে মানব সম্প্রদায়কে হেদায়ত করার জন্য মহান রাব্বুল আলামিন ধরার বুকে অসংখ্য নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন। এ ধারার পরিসমাপ্তি ঘটে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) এর আগমনের মধ্য দিয়ে। নবুয়তের ধারার পরিসমাপ্তির পর বেলায়তের ধারার মাধ্যমে হেদায়তের এ কাজ আউলিয়ায়ে কেরামগণ আঞ্জাম দিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ধরার বুকে শুভাগমন করেন খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রা.)। যিনি প্রিয় রাসূল (দ.) এর বাতেনি নূর তাওয়াজ্জুহ প্রদান করে মানুষকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে ইনসানে কামেল তৈরিতে ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছেন। প্রিয় রাসূল (দ.) এর বাতেনি নূর ক্বলবে গ্রহণ করার পর এমনভাবে পরিবর্তন হয় যা রীতিমত বিস্ময়কর। নবীজি (দ.) এর বাতেনি নূরের প্রভাবে মানুষ হালাল-হারাম পৃথক করে চলতে শিখে, এবাদতে এক্বিনে এখলাসের সৃষ্টি হয়, সবর শোকরে পথ চলার পাথেয় পায়। এই বাতেনি নূর পুরুষরা সামনা সামনি বসে তাওয়াজ্জুহ বিল হাজের এর মাধ্যমে গ্রহণ করে। মহিলারা তাওয়াজ্জুহ বিল গায়েব এর মাধ্যমে নূরে বাতেন গ্রহণ করতে পারে, এ জন্য কোনো মহিলাকে দরবার শরীফে আসতে হয় না, হযরত গাউছুল আজম (রা.)-কে কখনো কোনো মহিলার সামনে যেতে হয়নি, এই নিয়ামত এখনো দরবার শরীফে অব্যাহত রয়েছে। এই তরিক্বত একদিকে যেমন আধ্যাত্মিক নিয়ামতে সমৃদ্ধ, অন্যদিকে বিজ্ঞানসম্মত এবং যুগোপযোগী। হযরত গাউছুল আজম (রা.) এর তরিক্বতে শরীয়তের পূর্ণাঙ্গ অনুশীলনের পাশাপাশি সুন্নাতে মোস্তফা (দ.) জীবনে বাস্তবায়নের শিক্ষা দেওয়া হয়। এই তরিক্বতে রয়েছে মোরাকাবা, ফয়েজে কুরআন, জিকিরে জলী, জিকিরে খফি-সহ অনন্য সব নিয়ামতের সমাহার। এছাড়াও রয়েছে মুহাব্বতের নিয়তে দৈনিক এগারোশত এগারো বার দরূদ শরীফ আদায়ের নিয়ম যা কখনো ক্বাজা হলে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আদায় করে দিতে হয়। হযরত গাউছুল আজম (রা.) সিনা মোবারক থেকে নূরে বাতেন গ্রহণ করে ফরজ এবাদতের পাশাপাশি নফল এবাদতের এমন চর্চা মানুষকে করে স্রষ্টার নিকটবর্তী, প্রিয়নবী (দ.) এর একান্ত প্রিয়জন।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) বেলা ৩ টা হতে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ পূর্ব গেইট সম্মুখস্থ ময়দানে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনে উপস্থিত লাখো মুসলমানের উদ্দেশ্যে প্রধান মেহমানের বক্তব্যে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মাননীয় মোর্শেদ, আওলাদে রাসূল (দ.) হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী এসব কথা বলেন।
চ.বি সিনেট সদস্য এবং সংগঠনের মহাসচিব প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এশায়াত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জমিয়তুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ্ব এ. এম. এম. বাহাউদ্দীন, মহাসচিব হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শাব্বির আহমদ মোমতাজী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জালাল আহমেদ।
বক্তব্য রাখেন মুফতি মাওলানা কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকী, মাওলানা মুহাম্মদ আবদুস সবুর, মাওলানা মুহাম্মদ ফোরকান, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ এরশাদুল হক, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন নূরী, মাওলানা মুহাম্মদ রকিব উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানি ফয়সাল ও মাওলানা মুহাম্মদ সায়েম।

মিলাদ-কিয়াম শেষে মাননীয় প্রধান মেহমান দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি-সমৃদ্ধি এবং কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদি¦য়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।

Facebook Comments Box
Share: