সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় খাবার পৌঁছে দেওয়ার রোবট তৈরি করে দক্ষিণ কোরিয়ায় আলোচনায় এসেছেন এক প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ।
তার নাম লাবিব তাজওয়ার রহমান, তিনি সিউলের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘নিউবিলিটি’ এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি তার সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ড্রু লি ও সিউংহো চোর মিলে রোবটটি তৈরি করেছেন।
লাবিব জানান, তার ছোট ভাই সেরিব্রাল পালসি রোগে আক্রান্ত ছিল। ছোটবেলায় ভাইয়ের মৃত্যুর পর মানসিক আঘাত পান লাবিব। সেই কষ্ট মনে নিয়ে ২০ বছর বয়সে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারগ্রাজুয়েট পড়ার সময় থেকে লাবিব ও তার বন্ধুদের কোরিয়ার নামিদামি প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে পরিচয় গড়ে ওঠে।
২০১৫ সালে দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় লাবিবের পরিচয় হয় অ্যান্ড্রু লি ও সিউংহো চোর এর সঙ্গে। তারা তিনজন নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টারে অনুষ্ঠিত কনরাড অ্যাওয়ার্ডে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনজনই ছিলেন ফাইনালিস্ট, আর তখন থেকে তাদের বন্ধুত্বের শুরু।
লাবিব বলেন, “প্রতিযোগিতার পরও বহুদিন পর্যন্ত আমরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম। সবসময় ভাবতাম তিনজনে মিলে কিছু একটা উদ্ভাবন করা যায় কিনা! শেষ পর্যন্ত আমরা নিউবিলিটি গড়ে তুললাম। প্রাথমিকভাবে আমরা গেমিং এর আনুষঙ্গিক বানানোর পরিকল্পনা করেছিলাম। এ আইডিয়া নিয়ে আমরা কয়েক বছর কাজও করেছি। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার বড় প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষ দ্বারা পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার বিকল্প খুঁজছিল।” লাবিব জানান, দক্ষিণ কোরিয়ায় হোম ডেলিভারির বিশাল বাজার রয়েছে এবং দেশটিতে ই-কমার্সের বিস্তৃতির কারণে পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছিল। সেই থেকে তারা ডেলিভারি রোবট বানানোর সিদ্ধান্ত নেন।
লাবিব তার উদ্ভাবিত রোবট সম্পর্কে বলেন, “রোবটটি অর্ডার করা খাবার রেস্টুরেন্ট থেকে সংগ্রহ করে হোম ডেলিভারি দেবে। ডেলিভারিম্যান যা করে, কোনো মানুষ ছাড়া এখন থেকে রোবটটি তাই করবে। নিউবিলিটি মূলত রোবট তৈরি করে। আমাদের রোবটগুলো ডেলিভারি দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে। এজন্য হুন্দাই মোটরসের কাছ থেকে অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করেছে নিউবিলিটি।”
লাবিব বাংলাদেশে ‘ইনক্লুশনএক্স’ নামে একটি মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ডিজ্যাবিলিটি ইনক্লুশন সার্ভিস চালু করেছেন। ‘স্ট্যানফোর্ড ডিজ্যাবিলিটি ল্যাঙ্গুয়েজ গাইড’ নামে একটি বইও লিখেছেন তিনি। এছাড়া স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ফিজিক্স সোসাইটির সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন লাবিব।