ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্যে মাওবাদীদের হামলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ২২ সদস্য নিহত হয়েছে। শনিবার ছত্তিশগড়ে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে। রবিবার ভারতীয় কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, এই বছরে এখন পর্যন্ত এটিই মাওবাদীদের সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা।
সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের এলিট কোবরা ইউনিট, ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড ও স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের সমন্বয়ে গঠিত নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় মাওবাদীরা। উপজাতি অধ্যুষিত মাওবাদী দমন অভিযান পরিচালনার সময় শনিবার এই হামলা হয়।
খনিজ সম্পদে ভরপুর ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরের এক সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা জানান, মাওবাদী যোদ্ধাদের হামলায় ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর ২২ জন জওয়ান নিহত হয়েছে।
এর আগে শনিবার মাওবাদীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৫ ভারতীয় জওয়ান নিহত ও ১৮ জন নিখোঁজ বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল। হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছিল, ছত্তিশগড় পুলিশের মহাপরিচালক ডিএম অবস্থি শনিবার পাঁচ জন নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সুকমা ও বিজাপুর জেলার সীমানায় মাওবাদীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরা। তখনই তাদের ওপর হামলা চালায় মাওবাদীরা। পাল্টা জবাব দেয় বাহিনীও। তখন উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে পাঁচ জওয়ান নিহত হয়। রবিবার সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, হামলাস্থলে আরও ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২জনে।
এর আগে গত মার্চে ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বহনকারী একটি বাসে হামলা চালায় মাওবাদী বিদ্রোহীরা। ৪০ সদস্যকে বহনকারী বাসটিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হলে অন্তত পাঁচ জন নিহত এবং আরও অন্তত ১৫ জন আহত হয়।
উল্লেখ্য, চীনা বিপ্লবের নেতা মাও সেতুং-এর অনুপ্রেরণায় চার দশকের বেশি সময় ধরে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে মাওবাদীরা। বর্গা চাষী, দরিদ্র ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য জমি ও কাজের দাবিতে তাদের এই সশস্ত্র লড়াই। ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য মাওবাদীদের সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে ঘোষণা করেছে দিল্লি। অন্যদিকে কয়েক হাজার সশস্ত্র যোদ্ধা নিয়ে ছত্তিশগড়ের বিশাল পাহাড়ি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে তারা।