ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও রাশেদ খানকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে পুরাতন নামে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে একাংশ।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এপিএম সুহেল নামের একজনকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে সংগঠনের একাংশ ২২ সদস্যের (আংশিক) নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে।
পুরাতন নামে ফিরে যাওয়াদের দেয়া কমিটির তালিকায় দেখা যায়, আহ্বায়ক এপিএম সুহেল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে ১৪ জনকে। তালিকায় দ্বিতীয়তে রয়েছেন জালাল আহমেদ নামে একজন, তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় দেয়া মো. জামিনুর রহমানের নাম রয়েছে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে এক নম্বরে। অন্য ১২ জন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী।
প্রেসক্লাবে করা সংবাদ সম্মেলনে পুরাতন কমিটির বিরুদ্ধে নৈতিকস্খলন, আর্থিক অস্বচ্ছতা, নারী কেলেঙ্কারি ও সংগঠনের অভ্যন্তরীণ স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের অভিযোগ আনা হয়। দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপি হিসেবে বিজয়ী হওয়ার পর নুরুল হক নুর রাজনৈতিক অঙ্গন এবং শিক্ষাঙ্গনে আলোচনায় আসেন। সাধারণ একজন শিক্ষার্থী থেকে ডাকসুর ভিপি হওয়ার- এই ঘটনাকে ‘চমক’ হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
এর আগে নুর এবং রাশেদ খান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শুরু করা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনের মাঠে যোগ দেন। সে সময় নুরকে প্রধান করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ গঠন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
পরে সে নাম পরিবর্তন করে নুর ‘বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ’ নামে নতুন করে একই সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন। এই দল থেকে নুর জাতীয় সংদ নির্বাচন করারও ঘোষণা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী লালবাগ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ছয়জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন– ছাত্র অধিকার পরিষদের (সাময়িক অব্যাহতিপ্রাপ্ত) আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, নাজমুল হাসান, নুরুল হক নুর, মো. সাইফুল ইসলাম, নাজমুল হুদা ও আবদুল্লাহ হিল বাকি। মামলায় নুরকে করা হয় তিন নম্বর আসামি।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুক লাইভে ধর্ষণ মামলার বাদীকে ‘দুশ্চরিত্রাহীন’ বলেন নুর। তার এই শব্দ চয়ন নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এ সম্পর্কে নুরুল হক নুর ডয়েচে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘দুশ্চরিত্রা নয়, আমি দুশ্চরিত্রহীন বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘দুশ্চরিত্রাহীন, মানে তাকে চরিত্রবান বা চরিত্রহীন কোনোটাই বলিনি।’
ওই মামলায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম ও সংগঠনটির ঢাবি শাখার সহসভাপতি মো. নাজমুল হুদাকে সোমবার (১২ অক্টোবর) দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ ঘটনার জেরেই নুরের দলে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে।