কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে মাথা গোঁজার ঠাই না পেয়ে মুন্সিবাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছে সাধু লাল(৫৩)। প্রায় ২’শ বছর আগে নির্মিত ধরণীবাড়ীর এই রাজবাড়ীর বারান্দায় ৩ কন্যা সন্তান নিয়ে অতিকষ্টে ও নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন সাধু লাল।যে কোন সময় ছাদ ভেঙে মাথায় পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।সামান্য বৃষ্টি হলেই আসবাবপত্র সহ ভিজে যায় সব।দূর্ভোগ আর অভাব যেন পিছু ছাড়ছে না তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,উপজেলার ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের মুন্সিবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা পেশায় মুচি সাধু লাল। গত ৩ দফা বন্যা ও অবিরাম বর্ষণে অর্থের অভাবে মেরামত করতে না পাড়ায় সাধু লালের একটি টিনের চালাটি ভেঙে নষ্ট হয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।তাই প্রায় দেড় মাস ধরে ২’শ বছর আগে নির্মিত ধরণীবাড়ী রাজবাড়ীর বারান্দায় বসবাস করছে সাধু লালের পরিবার। প্রায় দিন ঘরে খাবার থাকে না।স্ত্রী আদরি দাস ছোট মেয়ে আরতি(৫)’র
জন্মের কিছুদিন পর প্যারালাইসেস হয়ে প্রায় ৫ বছর আগে মারা যান।বড় মেয়ে সরস্বতী (১১) বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও মেঝো মেয়ে ফাল্গুনী(৮)। যে বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা,সহপাঠীদের সাথে মুক্ত মনে ছোটা ছুটি করে খেলা করার কথা, ঠিক সেই বয়সেই ফাল্গুনীকে হাল ধরতে হয়েছে সংসারের।রান্না থেকে শুরু করে বড় ও ছোট বোনের খাওয়া,গোসল সবকিছুর তদারকির দায়িত্ব ফাল্গুনীর এখন কাঁধে।
সাধু লাল এ প্রতিবেদককে বলেন,বাড়ী ঘর নাই মুন্সিবাড়ীর বারান্দায় ছোট তিনটি নির্বোধ মাসুম বাচ্ছা রেখে সকালে কাজে যাই ওদের চিন্তা ভাবনায় ঠিকভাবে কাজে মনোযোগ দিতে পারি না। এদিকে করোনার কারণে কেউ কাজ করাতে চায়না।অভাবের কারণে ঠিকভাবে ওদের মুখে খাবার তুলে দিতে পাচ্ছি না।আমি তিন কন্যা নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছি। তিনি আরও বলেন, সরকার অনেক মানুষকে ঘর-বাড়ী বানিয়ে দেয়। আমার বাড়ীটা যদি ভাল করে দিত, আর কিছু নগদ টাকা পেলে মা মরা তিনটা সন্তান নিয়ে মুক্তভাবে বাঁচতে পারতাম।
এ বিষয়ে জানতে ধরণীবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ফুুলু’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ,বিষয়টি আমি জানি এবং তাদের খোঁজখবর নিয়েছি। সাধু লালের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হবে।