আবদুল্লাহ আল মামুন, সতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি:সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাঁড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. কবীর হোসেন মিলনসহ ৫জনের বিরুদ্ধে এক সপ্তাহ ধরে কৃষি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
এতে শুধু বিলের রাস্তা হুমকির মুখে পড়েছে। একইসাথে কাঁচা রাস্তা ও বাইপাস সড়কের উপর দিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শতাধিক হল্লা গাড়ি মাটি বহনে নিয়োজিত থাকায় ঘটছে দুর্ঘটনা।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাঁড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাইপাস সংলগ্ন শুকুর আলীর এবিবি ভাটার পাশে নাটাতলা বিলে যেয়ে দেখা গেছে পাঁচটি এস্কেবেটর মেশিনে ইউপি চেয়ারম্যান মো. কবির হোসেন মিলনের আড়াই বিঘা, আব্দুল বারীর দেড় বিঘাসহ পাঁচজনের সাড়ে ৮ বিঘা কৃষি জমির মাটি এক সপ্তাহ ধরে কাটা হচ্ছে।
মাটি কেটে হল্লা গাড়ি ভরাট করে সরু কাঁচা রাস্তার উপর দিয়ে বাইপাস সড়ক হয়ে ঝড়ের গতিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শুকুর আলীর এবিবি ভাটা, লিয়াকত হোসেনর বিবি ভাটা, জাফর আলীর এসবিএল ভাটা, ছিদ্দিক হাজীর গ্যারেজসহ বিভিন্ন ইটভাটায়। এ মাটি ব্যবহৃত হচ্ছে শহরের বিভিন্ন জলাশয় ভরাটের কাজে। বাইপাস সড়কের পাশে শুকুর আলীর ভাটার সন্নিকটে মাটি ব্যবসায়ি কাশেমপুরের আব্দুস সালাম, আলাউদ্দিন, আনারুল ইসলাম, খোকন, কুচপুকুরের রফিকুল ইসলাম, হল্লা গাড়ির ব্যবস্থাপক বাবুলিয়ার কামরুলসহ কয়েকজন কয়েকটি মটর সাইকেল পাশে নিয়ে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের গতিবিধির উপর নজর রাখছেন।
আবারো বৃষ্টি হলে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে না। সব কিছু জেনে শুনেও তারা প্রভাবশালী আওয়ামী লীগম বিরোধী ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পারছেন না।অনতিবিলম্বে এ মাটি কাটা বন্ধ করা না হলে ওই এলাকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। তবে বাবুলিয়ার কামরুল নাটাতলা বিলে মাটি বহনের কাজে শতাধিক হল্লা গাড়ির আয়োজন করে দিয়ে প্রতিটি গাড়ি থেকে ৫০ টাকা করে দালালি নিচ্ছেন উল্লেখ করে তারা বলেন, এসব ভূমি খাদকদের প্রতিহত করা দরকার।
এ ব্যাপারে আগরদাঁড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. কবীর হোসেন মিলন এ প্রতিবেদককে বলেন, ভোট করতে যেয়ে ঋণগ্রস্ত হওয়া ও মায়ের হজ্ব যাত্রার খরচের জন্য তিনি মাটি বিক্রি করেছেন। তিনিসহ দুটি গ্রুপে সাড়ে আট বিঘা জমির মাটি বিক্রি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাটি যেভাবে গভীর করে খনন করা হচ্ছে তাতে কিছু কাঁচা রাস্তা ক্ষতি হতে পারে। নষ্ট হতে পারে পরিবেশ। বিষয়টি নিয়ে তিনি চিন্তিত।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা শাখার উপপরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, শুকুর আলীর ভাটা এলাকায় কৃষি জমির মাটি কাটা বন্ধে ইতোপূর্বে সাইন বোর্ড লাগানো ছিল। তবে এখন মাটি কাটা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, বিষয়টি নিয়ে নির্ধারিত জায়গা উল্লেখ করে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে কাজ করতে সুবিধা হয়। সাধারণ মানুষ ভয় পেলেও সাংবাদিকরাও অভিযোগ দিতে পারেন। তবে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে মোবাইল ফোন রিসিভ না হওয়া কথা বলা হয়নি।