ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুর রেলষ্টেশনে ভারত থেকে আমদানীকৃত পাথর আনলোডিং এর বিষয়ে রেলষ্টেশন মাষ্টারের অবৈধভাবে আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে ট্যান্ডেল নিয়োগের ফলে ও রেলষ্টেশন মাষ্টারের অনৈতিক কার্যকলাপ ফাঁস করলেন ফরিদপুর চেম্বার অফ কমার্স এ্যন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রির চলমান সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমানসহ তার পরিবার ও স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ। তারা বলেন ফরিদপুর জেলার রেলষ্টেশন সংলগ্ন আলাউদ্দিন ট্রেডিং কোং লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ফরিদপুর চেম্বার অফ কমার্স এ্যন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রির চলমান সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ ফরিদপুর রেলষ্টেশন এ নতুন করে রেল চালু হবার পর হতে নিয়মিতভাবে লেবার হ্যান্ডেলিং ও মালামাল আনলোডিং (ট্যান্ডেল) এর কার্যক্রম সুনামের সহিত সুসম্পাদন করে আসছে। সে প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ৮ টি র্যাক আনলোড করে থাকে। এছাড়া ব্যবসার স্বার্থে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেমনঃ রাজশাহীর আমনুড়া, সিরাজগঞ্জ, কাশিয়ানী, সাতৈর, মধুখালি ও আমিরাবাদে নিয়মিতভাবে ভারত হতে আমদানীকৃত পাথর আনলোড করে থাকে। গত ২০১৯ইং সালে সে সর্বমোট ৯৮টি র্যাক ও চলতি বছর করোনাকালীন দূর্যোগের মধ্যেও ৩০ টি র্যাক ইমর্পোট করে আনলোড করেছে। কিন্তু গত কয়েক মাস যাবৎ মহামারীর কারণে (রেল বন্ধ থাকার কারণে) পাথর আমদানী কম হওয়ায় ফরিদপুর রেল ষ্টেশনের মাষ্টার,মাসুদ রানা রণির র্যাক প্রতি চাঁদা প্রদানের হার বিগত বছরের তুলনায় কম হয়ে যায় ফলে সে ক্ষিপ্ত। তার ক্ষিপ্ততার মাত্রা এতই ভয়ংকর যে, স্থানীয় লেবার সর্দার থেকে শুরু করে খেটে খাওয়া মানুষগুলো ও আজ কাজ হারিয়ে পথে বসেছে।
মোঃ সিদ্দিকুর রহমান প্রতি বছর গড়ে রেলভাড়া প্রায় ১০ কোটি টাকা ও ভ্যাট ট্যাক্স বাবদ আর ও প্রায় ১৪ কোটি টাকা পরিশোধ করে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপ নিয়ে তার পরিবার বলেন, এই ষ্টেশন মাষ্টার তার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কাউকে কিছু না জানিয়ে স্ব উদ্যোগে মোটা টাকা ও গাড়ীর বিনিময়ে ফরিদপুর রেলষ্টেশন এর লেবার হ্যান্ডেলিং পয়েন্টের মালামাল আনলোডের (ট্যান্ডেল) নিয়োগ অনুমোদন একজন সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজের হাতে তুলে দিয়েছেন। অনুমোদন প্রাপ্ত সেই চাঁদাবাজ গং ষ্টেশন মাষ্টার এর স্বাক্ষরিত লেবার হ্যান্ডেলিং পয়েন্টের অনুমোদনের কাগজ পেয়েই মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের নিজ নামে আনা র্যাক তাদের মাধ্যমে আনলোড করতে চাঁদা দাবী করে। দিতে অস্বীকার করায় উক্ত ষ্টেশনমাষ্টার বলে ”আপনারা এ্যাডভান্স ডিসি দিয়ে মালামাল আনলোড করবেন। দেখি কত পারেন ? খুব তাড়াতাড়ি আপনাদেরকে দেউলিয়া করে ছাড়ব।”এর পরপরই সে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্রের গডফাদারকে নিয়ে সদ্য উপহার পাওয়া গাড়ীতে করে মদ্যপ অবস্থায় স্থানীয় একটি বস্তির মধ্যে প্রবেশ করে। কথিত আছে ,সে নারী ভোগীও।
একজন সরকারী কর্মচারী হয়ে তার এহেন কার্যকলাপ অশোভনীয় ও শিষ্টাচার বর্হিভূত নয় কি ? বিষয়টি বিভিন্ন মহলে জানাজানি হলেও এখনও পর্যন্ত রেল মন্ত্রনালয়ের কানে পৌছিয়েছে কিনা তার সদুত্তর কেউই জানেন না। অবাধে মাদক ব্যবসার ভাগও নাকি পেয়ে থাকেন এই বিরাট ক্ষমতাধর রেল মাষ্টার! কোন পথে যাচ্ছে দেশ? সম্প্রতি রাজশাহী হতে ফরিদপুর নতুন রেল যোগাযোগ চালু হয়েছে। হয়তো বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজরিত এই ফরিদপুরই হতে চলেছে মাদকের নতুন হটস্পট। আর তারাই পথপ্রদর্শক হতে চলেছে এই রেল মাষ্টার রনি। ফরিদপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল জলিল শেখসহ নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারির অনেকেই জানালেন, এছাড়াও রেল মাষ্টার রনি কোন সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যাক্তি স্বার্থে হাসিলের উদ্দেশ্যে বিভাগীয় বানিজ্যিক কর্মকর্তাকে উপেক্ষা করে সর্দার নিয়োগ দিয়ে, ফরিদপুর স্টেশনকে একটি অস্থিতিশিল পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। তারা বলেন বিগত দুই বছর বিভিন্ন সময় ও বর্তমানে ফরিদপুরসহ আমিরাবাদে অতিরিক্ত দায়ীত্ব পালন করে আসছে রেল মাস্টার রনি। তারা বলেন গত ৩০-১০-২০২০ তারখে ৪২ টি বগি নিয়ে দর্শনা হতে ফরিদপুর একটি মাল বাহী গাড়ী আসে। সেই মাল স্টেশন মাষ্টার রনি এবং তার পার্টনার আনলোড করতে দেয়নি। এতে সরকারের প্রায় ৭৫ হাজার টাকা রাজস্ব হারিয়েছে বলে জানা যায়।
এমনকি প্রতিনিয়ত এই স্টেশন মাষ্টার ষ্টেশনের ভিআইপি কক্ষে মাদক সেবন করে আসছে। তার শারীরিক পরিক্ষা করা হলে তিন যে একজন মাদক সেবী তা খুব সহজেই প্রমানিত হবে বলে জানান স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ। গত ২০১৯ সালে জুন মাসের দিকে সরকারি রেলের টিকিট বাবদ ৮২ হাজার টাকা আতœসাৎ করায় উক্ত রেল মাষ্টার রনিকে সাময়ীক বরখাস্ত করে রেল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তিতে তদবিরের মাধ্যমে চাকরিতে যোগদান করেন তিনি। উক্ত অভিযোগের ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশির বানিজ্যিক কর্মকর্তা ফুয়াদ হোসেন আনন্দ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পুর্বে কিছু সুনিশ্চিত অভিযোগের ব্যাপারে এক স্টেশন মাষ্টারকে বদলি করা হয়েছে। ফরিদপুর স্টেশন মাষ্টার রনির বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈশ্বরদী পাঁকশির বিভাগীয় কর্মকর্তার সাথে কথা হলে, উক্ত অভিযোগের ব্যাপারে প্রমানিত হলে স্টেশন মাষ্টার রনিরর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। উক্ত অভিযোগের ব্যাপারে ফরিদপুর স্টেশন মাষ্টার মাসুদ রানা রনির মুঠোফোনে একাধীকবার ফোন দিলেও তিনি ফোনটি ধরেননি। তাই সুষ্ঠ তদন্ত পুর্বক ফরিদপুর রেলষ্টেশনে কে রাহুমুক্ত করতে রেল কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করছে রেল কর্মচারি ও এলাকার সচেতন মহল।