পাকিস্তানে বেসামরিক খাতে প্রতি তিনজন পাইলটের মধ্যে একজনের রয়েছে ভুয়া লাইসেন্স। এমনকি তাদের বিমান উড্ডয়নের যোগ্যতা পর্যন্ত নেই। বুধবার দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল বিষয়ক মন্ত্রী গোলাম সারওয়ার খান পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, দেশে বেসামরিক খাতে ২৬২ জন পাইলট নিজেরা কোনো পরীক্ষা দেন নি। তাদের হয়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য অন্য লোককে অর্থ দিয়েছেন তারা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে সক্রিয় রয়েছেন ৮৬০ জন পাইলট। তারা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স সহ আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিমান সংস্থার বিমানে পাইলটের দায়িত্ব পালন করেন। এমনকি তারা বিদেশী বিমানেও দায়িত্ব পালন করেন।
যেসব পাইলটের ভুয়া লাইসেন্স আছে তাদের সবাইকে ‘গ্রাউন্ডেড’ করেছে পাকিস্তান ইন্টারন্যশানাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ)। তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে। মুখপাত্র আবদুল্লাহ খান বলেছেন, পিআইএ স্বীকার করে যে, ভুয়া লাইসেন্স পিআইএর কোনো ইস্যু নয়। কিন্তু এটা পাকিস্তান বিমান সংস্থাগুলোতেই বিদ্যমান। কিছু ভুয়া পাইলট বিদেশী সার্ভিসও দিয়ে থাকেন।
গত ২২ শে মে করাচির কাছে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ৯৭ জন নিহত হওয়ার পর প্রিলিমিনারি তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় বুধবার। ওইদিন যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় তা পিআইএর। সেটি লাহোর থেকে উড্ডয়ন করে। এর মাত্র দু’জন যাত্রী ও একজন ক্রু বাদে সবাই নিহত হন। ওই ফ্লাইটের দু’পাইলটের ভুয়া লাইসেন্স ছিল কিনা সে বিষয়ে মন্তব্য করেন নি মন্ত্রী।
তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, বিমানটি সেদিন আবাসিক এলাকার ওপর দিয়ে যখন ওড়ে তখন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের সতর্কতা উপেক্ষা করে এর পাইলটরা করোনাভাইরাস নিয়ে আলোচনায় মশগুল ছিলেন। মন্ত্রী বলেছেন, ফ্লাইটের পুরো পথে করোনা ভাইরাস নিয়ে আলোচনা করছিলেন ওই দুই পাইলট। কিভাবে তাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা করছিলেন তারা। এমনকি নিজেরা ছিলেন অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসী।
মন্ত্রী গোলাম সারওয়ার খান বলেছেন, ওই পাইলটদের তিনবার সতর্ক করেছেন কন্ট্রোলার। তাদেরকে বলা হয়েছিল তারা বিমান নিয়ে খুব বেশি উঁচুতে আছেন। তাদের উটিত হবে না অবতরণ করা। এসব নির্দেশনার কোনোটিতেই তারা মনোযোগ দেয় নি। কিন্তু তারা ল্যান্ডিং গিয়ার ছাড়াই বিমান অবতরণের চেষ্টা করান। ফলে বিমানটির ইঞ্জিন রানওয়ে স্পর্শ করে। এতে স্ফুলিঙ্গের সৃষ্টি হয়। অপূরণীয় ক্ষতি হয় বিমানের। সঙ্গে সঙ্গে পাইলটরা বিমানটিকে আবার বাতাসে ভাসিয়ে নেন। ওদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ইঞ্জিল ফেল খেয়ে যায়। এতে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
সূত্রঃ মানবজমিন