অবশেষে পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ভক্তদের চাওয়া। প্রত্যাশা ছিল কোপা আমেরিকার স্বপ্নের এক ফাইনালে খেলবে দুটি দল। প্রথম সেমিফাইনাল জিতে সেই মঞ্চটা সাজিয়ে রেখেছিল স্বাগতিক ব্রাজিল। বাকি ছিল শুধু আর্জেন্টিনার প্রত্যাশা পূরণের। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কলম্বিয়াকে টাইব্রেকারে হারিয়েই তারা নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মহারণ!
এমন প্রত্যাশা পূরণের পেছনে বড় অবদান মেসির! ব্রাজিলে এবার দেখে মনে হচ্ছিল, নতুন একটা মানদণ্ড নির্ধারণ করতেই যেন তার আগমন। অবশ্য সেটি করেছেনও। ৪ গোলের সঙ্গে করেছেন ৫টি অ্যাসিস্ট! এর আগে কোপায় এত অ্যাসিস্ট করেনি কেউ!
প্রথম দিকেই সুযোগ তৈরি করা আর্জেন্টিনা প্রথম গোল পায় সপ্তম মিনিটে। ৭ মিনিটে লাউতারো মার্তিনেজ করেন প্রথম গোল। ডানপ্রান্তে পেনাল্টি অঞ্চলে বল পেয়ে যান মেসি। অসাধারণ দক্ষতায় কলম্বিয়া ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে এর পর বামপ্রান্তে থাকা মার্তিনেজকে পাস দিলে তিনি সহজেই জাল কাঁপান। যা ছিল মেসির পঞ্চম অ্যাসিস্ট। এর দুই মিনিট বাদে কলম্বিয়াও গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল। সেটি সেভ করেন আর্জেন্টাইন গোল কিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।
৩৬ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ ছিল বারিওসের। লুজ বল পেয়ে ভলি করেছিলেন কিন্তু বল গিয়ে লেগেছে ডান পোস্টে। এর পর কর্নার থেকে আবারও কলম্বিয়ার আক্রমণ। কুয়াদ্রাদোর কর্নার থেকে দারুণ এক হেড করেছিলেন মিনা। তার হেড ক্রসবারে লেগে চলে যায় পেছনে!
৪৪ মিনিটে মেসির দারুণ এক কর্নারে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ ছিল। কিন্তু ৬ গজ বক্সের প্রান্তে থাকা গনজালেস হেড করলেও নিচু হয়ে অবিশ্বাস্যভাবে সেটি রক্ষা করেছেন কলম্বিয়া গোলরক্ষক।
বিরতির পরই জমে উঠে খেলা। ৬১ মিনিটে অবিশ্বাস্য এক গোলে সমতা ফেরায় কলম্বিয়া। দুরূহ কোণ থেকে ডান পায়ের শটে জাল কাঁপিয়েছেন লুইস দিয়াজ। এর আগে অবশ্য ফাউলের শিকার হন মেসি। তাতে পা থেকে রক্ত ঝরতে থাকলেও আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকর খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন অদম্যভাবে।
তার পর কলম্বিয়া আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলেও ব্যবধান বাড়াতে মরিয়া হয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে কয়েকবার। ৮১ মিনিটে ডি মারিয়ার থ্রু বল পেয়েও মেসি শট নেন বাম পোস্ট বরাবর!
এর পর সমানতালে ফাউলের ঘটনাও ঘটে ম্যাচে। কিন্তু স্কোরলাইনে (১-১) আর হেরফের হয়নি। পূর্ব নির্ধারিত এক্সট্রা টাইম বাদ দিয়ে ম্যাচ টাইব্রেকারে গেলে সেখানেই শেষ হাসি হেসেছে আর্জেন্টিনা। শুটআউটে আর্জেন্টিনা জেতে ৩-২ ব্যবধানে। অবশ্য শুটঅঅউটে এমিলিয়ানো মার্তিনেজ বীরত্বই বাঁচিয়ে দিয়েছে আলবেসেলেস্তেদের। আর্জেন্টাইন গোলকিপার তিনবার রুখে দিয়েছেন কলম্বিয়ানদের!
এখন ১১ জুলাই রবিবার ভোর ৬টায় শিরোপা লড়াইয়ে মারাকানায় মুখোমুখি হবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা।