আমি জীবিত থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রীকে ক্যামনে বিধবা ভাতার কার্ড দিলো? ক্ষুব্ধ কৃষক ইসলাম উদ্দীনের প্রশ্ন। বয়স ৬৫ হলেও, নিয়মিত মাঠে কাজ করেন কৃষক ইসলাম উদ্দিন। অথচ কয়েক মাস হলো সুস্থ এই মানুষটির নাম উঠেছে মৃতের তালিকায়। ইসলামকে না জানিয়েই তার স্ত্রী হাজেরা খাতুন বিধবাভাতার কার্ড তুলে তা ব্যবহার করছেন।
ইসলাম উদ্দীনের স্ত্রীর মতো সরকারি খাতায় স্বামীকে মৃত দেখিয়ে বছরের পর বছর ধরে নেত্রকোণায় পূর্বধলা উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নে বিধবা ভাতা নিচ্ছেন অনেকে। অভিযোগ আছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে একটি চক্র আর্থিক সুবিধা নিয়ে বিধবা ভাতার কার্ড করে দিচ্ছে তাদের।
স্থানীয়রা বলেন, স্বামী থাকা সত্ত্বেও অনেককে বিধবা ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কালাম। তিনি অনেকগুলো কার্ড করে দিয়েছেন বলেও জানায় এলাকাবাসী। আর এ কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন দরিদ্র বিধবা নারীরা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন সুমন মিয়া নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। তবে অভিযোগ করার পর থেকেই তাকে চাঁদাবাজি ও হয়রানির মামলা দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। এমনকি হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আবুল কালাম। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে জেলা সমাজসেবা অধিদফতর। অনিয়মে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস উপপরিচালকের। নেত্রকেণা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আলা উদ্দিন বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নেত্রকোণায় বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ৪৭ হাজার ২৭৮ জন নারী। এই তালিকায় রয়েছেন পূর্বধলা উপজেলার সাড়ে ৪ হাজার নারীও।