তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার-শমসেরনগর-চাতলাপুর চেকপোস্ট সড়কে ধলাই নদীর সেতু আবারও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অধিক ভারী যান চলাচলের কারণে এই অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে এই সেতু হয়ে চলাচলের ৪ দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে সোমবার (১৪ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল) পর্যন্ত বিকল্প সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছে সড়ক বিভাগ।
ধলাই নদীর ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি মেরামত করার জন্য এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন সড়ক বিভাগ মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন। তিনি বলেন, সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর আমরা ৩ টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচল না করার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তা অমান্য করে এই ক’মাস ৫-৭ টন পর্যন্ত ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে আবারও এই সড়কে ঝুঁকি বেড়ে গেছে। তাই ঈদকে সামনে রেখে যেকোনো দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুটি মেরামত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজার সড়ক বিভাগ সূত্রের বরাতে জানা যায়, মৌলভীবাজার-শমসেরনগর-চাতলাপুর চেকপোস্ট সড়কে ধলাই সেতুর মুখে সড়ক দেবে বিশাল ফাটল দেখা দিলে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর থেকে এই সড়কে লাল পতাকা টানিয়ে যান চলাচল বন্ধ করা হয়। ১২ দিন চেষ্টার পর ২৯ ডিসেম্বর অস্থায়ীভাবে যান চলাচলের জন্য এখানে একটি বেইলি সেতু চালু করা হয়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না যেতেই কয়লা বোঝাই একটি ট্রাক উঠে সেতুটি ভেঙে পড়ে।
ফলে এই সড়কে চলাচলকারী কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ আবারো দুর্ভোগে পড়ে। পরে মেরামত কাজ করে পুনরায় গত পয়েলা জানুয়ারি আবার তা চালু করা হয়।
সড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, ১৯৮৮ সালে কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট এলাকায় ধলাই নদীর ওপর ৫২ মিটার লম্বা এবং ৩ দশমিক ৭ মিটার প্রস্থের ওই সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
পরে চাতলাপুর চেকপোস্ট হয়ে অসংখ্য গাড়ি যাতায়াতের কারণে গুরুত্ব বেড়ে গেলে সড়কটি অধিগ্রহণ করে মৌলভীবাজার সড়ক বিভাগ।
জানা যায়, মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার উভয় পাশে ১ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। এখানে প্রতিনিয়ত ড্রেজার মেশিন দিয়ে ধলাই নদী হতে বালু উত্তোলন করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতু এলাকা জুড়ে অতি মাত্রায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলেই নদী পাড়ের মাটি ধসে পড়েছে। শুধু সেতুই নয়, নদী পাড়ের প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ফাঁটলের দেখা মিলেছে, এমতাবস্থায় আরও বড় রকমের ক্ষতির সম্মুখীন হতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।