ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত সিরিয়াকে প্রায় ১ কোটি ৩৬ লাখ মার্কিন ডলার সমমূল্যের মানবিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা ১৪৫ কোটি ৪৬ লাখ ৪১ হাজার টাকার সমান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পে দেশ দুটিতে ৪ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, তুরস্কে নিহত মানুষের সংখ্যা ২ হাজার ৯২১। আহত ১৫ হাজার ৮৩৪ জন। সিরিয়ায় নিহত ১ হাজার ৪৪৪ জন। আহত ৩ হাজার ৪১১ জন। ভূমিকম্পে উভয় দেশে হাজারো ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে, যার মধ্যে অনেক বহুতল ভবন রয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা চলছে। উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে নিহত মানুষের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পের পর বিভিন্ন দেশ-সংস্থা তুরস্ক ও সিরিয়াকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। তুরস্কে ইতিমধ্যে কেউ কেউ সহায়তামূলক কার্যক্রম শুরুও করে দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ডব্লিউএএম জানিয়েছে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম গতকালই সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তার নির্দেশ দেন। তুরস্ককে সহায়তার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের আদানা বিমানবন্দরে একটি উড়োজাহাজ পাঠিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সংযুক্ত আরব আমিরাত বলেছে, তারা তুরস্কে একটি ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছে। এ ছাড়া তারা সিরিয়ায় অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল পাঠাবে। দেশটিতে তারা জরুরি ত্রাণ ও সহায়তা পাঠাবে । সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান সিরিয়া ও তুরস্কের নেতাদের ফোন দিয়েছেন। তিনি তাঁর সমবেদনা জানিয়েছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ডব্লিউএএম জানিয়েছে, ভয়াবহ এই মানবিক বিপর্যয়ে সিরিয়া ও তুরস্কের জন্য ইউএইর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন আল-নাহিয়ান। ভূমিকম্পের প্রভাব প্রশমিত করার জন্য সিরিয়া ও তুরস্কের প্রচেষ্টায় যেকোনো সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সিরিয়ার রাজধানীতে পুনরায় দূতাবাস চালু করে। গত বছরের মার্চে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন। এক দশকের বেশ সময় ধরে সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে এটা ছিল তাঁর প্রথম কোনো আরব রাষ্ট্র সফর।