বাজেট উত্থাপনের দিন ৩৫০ এমপির মধ্যে মাত্র ৮৮ জন জাতীয় সংসদে উপস্থিত থাকার জন্য তালিকাভুক্ত ছিলেন। সংসদে করোনা হটস্পট হিসেবে দেখা দেয়ায় এই ব্যবস্থা করা হয়। বাংলাদেশের সংসদীয় ইতিহাসে এমনটি আর কখনও ঘটেনি।
গত বছরও আড়ম্বরপূর্ন অধিবেশনের মাধ্যমে বাজেট পেশ হয়েছে। কিন্তু করোনা মহামারীর মধ্যে এই বাজেট উত্থাপন হয়েছে স্বল্প পরিসরে। এর আগে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মাত্র ১০ জন এমপি উপস্থিত থাকার সুযোগ পান।
সংসদের একাধিক সূত্র জানায়, আগামী ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনের মন্ত্রিসভা বৈঠকে ৯ জন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভা কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এই বৈঠক অনুষ্টিত হয়। বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ উপস্থিত থাকার সুযোগ পান।
এরপর বিকাল ৩টায় কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনাকালের বাজেট অধিবেশন উত্থাপন শুরু হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ উপস্থিত ছিলেন।
সংসদে উপস্থিত সবাইকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে সংসদ ভবন ছাড়াও অধিবেশন কক্ষে ঢুকতে হয় তাদের। এছাড়া নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে নির্ধারিত এমপিদের সংসদে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। এজন্য যে ৮৮জন এমপি তালিকাভুক্ত ছিলেন, শুধুমাত্র তারাই অধিবেশনে যোগ দেন। অসুস্থ্ ও বয়স্ক এমপিরাও সংসদে যাননি। এসময় সবাই মাস্ক পড়ে ছিলেন। সবার তাপমাত্রা মাপা হয়েছে। তবে সাংবাদিকদের কোনো প্রবেশের অধিকার ছিল না।
রোববার পর্যন্ত সংসদের অধিবেশন মুলতবি: জাতীয় সংসদের নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) বাজেট অধিবেশন আগামী ১৪ মে পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটা ৫২ মিনিটে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশন রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন। এর আগে বেলা তিনটায় জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেটের কলেবর রাখা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এটি গতানুগতিক বাজেট নয়। সরকার এটিকে অর্থনৈতিক উত্তরণের বাজেট বলছে।
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে করোনাভাইরাস–পরবর্তী অর্থনীতি মোকাবিলায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে নতুন বাজেটে। সংসদ মুলতবি ঘোষণার আগে অর্থমন্ত্রী অর্থবিলটি সংসদে পেশ করেন।