হাদীস (আরবিতে الحديث) শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা ,কাজ ও সমর্থন কে হাদিস বলা হয়। আল্লাহ তায়ালা আল কুরআনে জীবন ব্যবস্থা কেমন হবে কিভাবে হবে জানিয়ে দিয়েছেন কিন্তু সেটা কোন আদর্শে হবে কি পন্থায় হতে হবে সেটা পূর্ণ রূপে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন।
রমজান সম্পর্কে হাদীসে কুদসীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন _
আল্লাহ বলেন, ‘‘বনী আদমের সকল আমল তার জন্য, অবশ্য রোযার কথা আলাদা, কেননা রোযা আমার জন্য এবং আমিই এর পুরস্কার দিব।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০৫, ৫৫৮৩ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬০) (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব হাদিস আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করে বর্ণনা করেছেন আলেমগণ সেগুলোকে “হাদিসে কুদসি” নামে অভিহিত করেছেন এক কথায় হাদিসে কুদসী হলো সেই হাদিস যে হাদিসে আল্লাহ বলেছেন রাসুল জানিয়েছেন )
উপরের এই হাদিস থেকে বুঝা গেল রোজার পুরস্কার আল্লাহ স্বয়ং নিজে প্রদান করবেন। আমরা অনেকেই চাকুরী করি, মনে করেন আপনি প্রতি দিন অফিসে কাজ করেন বেতন ও পান। একদিন একটি কাজ দেওয়া হলো আপনাকে এবং সেই অফিসের বা কোম্পানির মালিক আপনাকে বললেন এই কাজের মজুরি আমার হাতে দেব। তখন আপনার বুঝার বাকি থাকবে না যে এই কাজের মুল্য অনেক হবে কারণ মালিক নিজ হাতে দিচ্ছে। আর রোজার মজুরি তো দেবেন সেই মালিক যিনি এই বিশ্ব জাহানের মালিক।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন _
‘‘জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে যাকে বলা হয় ‘রাইয়ান’ – কিয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে রোজাদারগণ প্রবেশ করবে। অন্য কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না….. রোজাদারগণ প্রবেশ করলে এ দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে আর কেউ সেখান দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৭৯৭ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬৬ )
আল রাইয়ানের কথা মনে করিয়ে রোজাদারকে আল্লাহর রাসুল সুসংবাদ দিচ্ছেন । তবে রাইয়ানে প্রবেশ করতে হলে অবশ্যই পূর্ণ ঈমানের সরূপ রোজা রাখতে হবে।
ইবনু আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন_
“জিবরীল রামাদানের প্রতি রাতে এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাকে নিয়ে কুরআন পাঠ করতেন”। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০৪৮)
রামাদান মাস কুরআন নাযিলের মাস। এ মাসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিবরীলের সাথে কুরআন পাঠ করতেন। তার সীরাত অনুসরণ করে প্রত্যেক মু’মিনের উচিত এ মাসে বেশী বেশী কুরআন তেলাওয়াত করা, বুঝা এবং আমল করা। আমাদের দেশে দেখা যায় রমজান মাস আসলে খতম করার প্রতিযোগিতা শুরু যায় কিন্তু কুরআন যে কারণে নাজিল হয়েছে সেই ভাবনায় নেই। কুরআন পড়লে অবশ্যই সোয়াব হবে আর রামাদান মাসে এই সোয়াব অনেক বেশি। কিন্তু বুঝে পড়লে সোয়াবের পাশাপাশি আমল করা যাবে আর নেক আমল ছাড়া জান্নাতে যাওয়া সম্ভব নয়।
এই পবিত্র মাহে রামাদান মাসকে সামনে রেখে নিজের মনকে কুরআনের সাথে সম্পর্ক করার তৌফিক কামনা করতে হবে। মানুষের সাথে সদাচরণ করতে হবে। রোজা রেখে মেজাজ গরম করে কথা বলা উচিৎ নয়। হাসি মুখে কথা বলাও রাসুলের সুন্নত। রামাদান কারিম।
আব্দুল্লাহ আল শাহীন
আরব আমিরাত