সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বর্ণবাদী দুর্বৃত্ত কর্তৃক পবিত্র কোরআনুল কারিমে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ বাংলাদেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী।
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে মিরপুর ১ নং গোলচত্বরে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াত এর আয়োজন করে।
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, কোরআনে আগুনে দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্ব মুসলিমের ঈমান-আকিদা ও বোধ-বিশ্বাসে আঘাত হেনে ধৃষ্টতা প্রদর্শনের মাধ্যমে অপকর্ম করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহনগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, জামাল উদ্দীন, মু. আতাউর রহমান সরকার ও নাসির উদ্দীন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের শিবির সভাপতি সালাহউদ্দীন, পশ্চিম সভাপতি আসাদুজ্জামান ও ছাত্রনেতা আব্দুর রহীম প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে সহকারী সেক্রেটারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টেকনিক্যাল মোড়ে এসে শেষ হয়।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, বিশ্বমানবতার মুক্তির সনদ হলো মহাগ্রন্থ আল কুরআন। তাই এই মহাগ্রন্থ আল কুরআনের যেকোন ধরনের অবমাননা বিশ্বমুসলিম বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেবে না বরং মুসলিম উম্মাহ এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি সুইডিস সরকারকে অবিলম্বে অপরাধীকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহবান জানান।
তিনি বলেন, মহাগ্রন্থ আল কোরআন সার্বজনিন ও বিশ্বজনিন। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকলেই এই পবিত্র গ্রন্থের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাকে। আর পবিত্র কুরআন হল মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের মানদন্ড। মুসলমানরা শান্তিপ্রিয় জাতি হলেও প্রতিনিয়ত কুরআন অবমাননা করে মুসলমানদেরকে উত্যক্ত ও উস্কানী দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কোন মুসলমান বাতিল শক্তির উস্কানীতে পা দেবে না বরং শান্তিপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমেই সকল সকল সমস্যার সমাধান করবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, সুইডেনে দুর্বৃত্তরা পবিত্র কোরআনে অগ্নিসংযোগ করে মুসলমানদের হৃদয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ জেগে ওঠেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ সরকার সুইডিস রাষ্ট্রদূত ডেকে প্রতিবাদ জানিয়ে দায় শেষ করেছে।
মাওলানা আব্দুল হালিম কোরআন অবমানবতার ঘটনা জাতীয় সংসদে আলোচনা করে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করার জন্য জোর দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, সুইডেনে পবিত্র কোরআন পুড়িয়ে মুসলমানদের কলিজায় আঘাত করা হয়েছে। তাই এই অপর্কমের জন্য অপরাধীদের ফাঁসি দিতে হবে। প্রয়োজনে এদের শাস্তি দিতে ব্লাসফেমি আইন প্রণয়ন করতে হবে।
তিনি জামায়াতের ওপর সরকারের জুলুম-নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকার মিথ্যা মামলায় আটক রেখে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানকে অসম্মানজনকভাবে আদালতে হাজির করেছে। কিন্তু জামায়াতের ইসলামী দেশে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন কায়েম করতে চায়।
তিনি সরকারকে জুলুম-নির্যাতনের পথ পরিহার অবিলম্বে অবিলম্বে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ও মহানগরী আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ শীর্ষনেতাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই জাতীয় নেতাদের মুক্ত করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেন।