বাংলা এক্সপ্রেস ডেস্কঃ সিলেটে এক থানাতেই আক্রান্ত ২৬ পুলিশ সদস্য। দায়িত্ব পালনে আক্রান্ত হয়েছিলেন একজন। এরপর একে একে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেই থাকে। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতের রিপোর্টে আরো ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এই অবস্থায় থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন। তার নির্দেশে একজন পরিদর্শনের নেতৃত্বে অতিরিক্ত ৩০ জন পুলিশকে বিশ্বনাথ পাঠানো হয়েছে। তারা স্থানীয় রামসুন্দর হাইস্কুলে অবস্থান করে কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখছেন।
সিলেটের বিশ্বনাথ।
প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। এই বিশ্বনাথের দক্ষিনপাড়ে থানার অবস্থান। সিলেট শহর থেকে বিশ্বনাথ গেলেই বামপাশে পড়ে বিশ্বনাথ। পুলিশের ৮০ জনের বহর সার্বক্ষনিক অতন্দ্রপ্রহরী হিসেবে বিশ্বনাথের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে। বিশ্বনাথে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ জন। এর মধ্যে পুলিশেরই ২৬ জন। আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বনাথ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন ডাক্তারও। ঘটনার সূত্রপাত চলতি মাসের শুরুতে।
বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুছার জানান- করোনা কালীন সময়ে বিশ্বনাথের প্রবেশমুখগুলো চেকপোস্ট বসানো হয়। এর মধ্যে একটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছিলো ছাতকের সীমান্তবর্তী লামাকাজী এলাকায়। ওই এলাকায় যারা ডিউটিতে ছিলেন সেই পুলিশ সদস্যের শরীরে প্রথমে করোনা ধরা পড়ে। এ কারনে তিনি ধারনা করেন- ওই চেকপোস্ট থেকেই ‘করোনা এ্যাটাক’ হয়েছে। এরপর থানার ব্যারাক ও বাসা আইসোলেটেড করেও কোনো কাজ হয়নি। একের পর এক আক্রান্ত হতে হতে এখন ২৬ জন। আরো অন্তত ২৫ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন কোয়ারেন্টাইনে।
অধিকাংশ পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ায় বিশ্বনাথ থানায় সুস্থ থাকা পুলিশ সদস্যরা মানসিকভাবে অনেকটাই বিপর্যস্থ। এ কারনে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন। তিনি ইতিমধ্যে একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে ৩০ জনের একদল পুলিশ বিশ্বনাথ পাঠিয়েছেন। তারা অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় রামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে অবস্থান করেই তারা পাশ্ববর্তী থানার কার্যক্রমকে সহযোগিতা করছেন। এসপি নিজেও প্রতিনিয়ত তাদের খোজ খবর নিচ্ছেন। সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে মানসিক ভাবে সাপোর্ট দিচ্ছেন। ওসি শামীম মুছা জানিয়েছেন- ‘তার থানায় আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ জনকেই এসপি স্যারকে সিলেটের হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। তাদের দেখভাল করছেন তিনি নিজেই। আর বিশ্বনাথে প্রতিদিন কয়েক বার ফোন করে মানসিকভাবে আমাদের চাঙ্গা করে রেখেছেন।’
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফুর রহমান মানবজমিনকে জানিয়েছেন- বিশ্বনাথ থানায় অতিরিক্ত লোকবল পাঠানো হয়েছে। প্রতিনিয়ত আমরা খবর নিচ্ছি। থানার কার্যক্রম পরিচালনায় যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের চিকিৎসায়ও কোনো ত্রুটি রাখা হচ্ছে না।
উৎসঃ মানবজমিন