ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, আমি শহীদ এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। কর্পোরেশনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি রয়েছে। এই দুর্নীতিকে আমি প্রশ্রয় দেব না এবং দুর্নীতির লেশমাত্র এই সংস্থায় রাখব না।
মঙ্গলবার নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কর্পোরেশনের ২য় পরিষদের প্রথম কর্পোরেশন সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ঢাকাবাসীর কাছে দেয়া ওয়াদা পূরণে কর্পোরেশনের কাউন্সিলররাই তার পথচলার প্রধান সঙ্গী। আজ থেকে আমাদের নব যাত্রা শুরু হল। শুরু হল নব সূচনা। ঢাকাবাসীর কল্যাণে দেয়া ওয়াদা পূরণের লক্ষ্যে আমরা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছি । ইনশাআল্লাহ আমাদের কার্যক্রমের মাধ্যমেই ঢাকাবাসী এর প্রতিফলন দেখতে পাবেন।
তিনি বলেন এখন থেকে কর্পোরেশনের সব কাজে কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ত করা হবে এবং ঢাকাবাসীর কল্যাণে যা কিছু করা হবে, যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তা তাদের নিয়েই করা হবে এবং তার বাস্তবায়ন করা হবে।
মেয়র বলেন এই করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার অভিযাত্রায় আমরা উন্নত ঢাকা গড়ার ভিত্তি রচনা করে যাব। এজন্য বছরে ৩৬৫ দিন ১২ মাস ২৪ ঘণ্টা আমাদের কাজ করে যেতে হবে। ঢাকাবাসীর কাছে আমাদের যে দায়বদ্ধতা তা সবাই নিষ্ঠা নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে করলে সব সঙ্কট মোকাবেলা করেই আমরা কর্পোরেশনকে ঢাকাবাসীর আস্থা ও গর্বের সংগঠনে পরিণত করতে সক্ষম হব।
তিনি বলেন, আজ (মঙ্গলবার) থেকে কর্পোরেশনের দরজা আপনাদের জন্য খোলা। আপনারা সরাসরি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।
বোর্ড সভায় অর্থ ও সংস্থাপনবিষয়ক স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে নির্দিষ্ট দায়িত্বপালনের পাশাপাশি কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিবিষয়ক বা দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতির অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ প্রদানের অনুরোধ করেন। কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে কর্মকর্তাদের প্রতি মেয়র পুনরায় হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।।
মেয়র শেখ তাপস ঢাকাবাসীর সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিকল্পে যৌক্তিকভাবে নতুন নতুন আয়ের খাত সৃষ্টি করার ঘোষণা দেন। তবে নাগরিকদের ওপর কোনো কর বৃদ্ধি হবে না বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
সভার শুরুতেই তাপস জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় ৪ নেতা, ১৫ আগস্টে শহীদ তার পিতা শেখ ফজলুল হক মনি, মা আরজু মনিসহ সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে মেয়র মশক নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যানজট, জলাবদ্ধতা নিরসন, রাস্তাঘাট উন্নয়ন ও অবৈধ দখলমুক্তকরণ ইত্যাদি কাজে কাউন্সিলরদের সক্রিয় সহায়তা কামনা করেন।
বোর্ড সভায় মেয়র উন্নয়নকাজে কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ত করা এবং তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার ব্যাপারে বেশ কিছু বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, এখন থেকে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বোর্ড মিটিং অনুষ্ঠিত হবে এবং কাউন্সিলরগণ সপ্তাহে একদিন সমস্যা নিরসনে তার সঙ্গে আলাপ করতে পারবেন। এজন্য সপ্তাহের একটি দিন ধার্য করে দেবেন বলেও কাউন্সিলরদের আশ্বস্ত করেন মেয়র।
নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে আশ্বস্ত হওয়ায় কাউন্সিলররা মেয়রকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।