এনায়েত করিম রাজিব, বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এক সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ছাত্রী অপহরনের সাজানো নাটক অবশেষে ফাঁস হয়েছে। অভিযোগ উঠেছিল ৩০৬ নং বলইবুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মাসুদা খানমের (৫০) বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী মালা আক্তার অপহরনের।
অপহরন ঘটনাটি ছিল সাজানো বলে নিশ্চিত করেছেন বলইবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহাজাহান আলী খান্।
তিনি বলেন, গত শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই বিদ্যালয়ের মাঠে দু’পক্ষের উস্থিতিতে আমরা সালিশি বৈঠকে বসেছিলাম। বৈঠকে অপহৃত শিক্ষার্থী মালা আক্তার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, আমি সেদিন ম্যাডামের নামে মিথ্যে কথা বলেছি। ঘটনার আগের দিন রিফাত নামের এক যুবক আমাকে বলে তোকে আমি পছন্দ করি। তোকে নিয়ে আমি পালামু। তার কথামত পরদিন আমি স্কুলে আসি, এবং স্কুলে বইয়ের ব্যাগ রেখে রিফাতের সাথে যাই, রিফাত আমারে একটি মোটরসাইকেলে দৈবজ্ঞহাটি নিয়ে যায় ও আমারে বলে তোর তো খুলনায় মামার বাসা আছে। তোরে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে তুই সেখানে যা, সাথে রিফাতের এক বন্ধু ছিল। সেখানে গিয়ে বাড়ি ফোন করে বলবি মাসুদা ম্যাডাম তোরে একটা ব্যাগ নিয়ে রাস্তায় পাঠাইছিল এক লোককে দেওয়ার জন্য, সেই লোক তোরে কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছে তুই সেখান দিয়ে পালিয়ে আসছো তোর মামার বাসায়। মাসুদা ম্যাডামের সাথে রিফাত ভাইয়ার আগের শত্রুতা আছে।
ওই সালিশি বৈঠকে অন্যান্যেদের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নান্না শেখ,২নং ওয়ার্ডের ইউ পি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা খ.ম লুৎফর রহমান, শিক্ষক নেতা হারুন অর রশিদ, ওমর ফারুক, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার নতুন ,অভিযুক্ত রিফাত পুটিখালি ইউনিয়নের আলামিনের ছেলে, কাজের সুবাদে কালিকা বাড়ি মামার নাসিরের বাড়িতেই থাকেন। এবং ভাঙ্গারি মালামালের ব্যবসা করেন। এ বিষয়ে রিফাত বলেন আমি মালাকে চিনি না, মিথ্যে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মাসুদা খানম বলেন, আমার নামে যারা মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা ঘটিয়েছে আমি তাদের বিচার চাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রব মোল্লা বলেন, একটি কু-চক্রিমহল আমাদের হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনার জন্ম দিয়েছে বলে দাবি করেন। তবে ঘটনার সাথে আরো কেউ থাকতে পারেন বলে তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক নেতা হারুন আর রশিদ ও ওমর ফারুক বলেন, আমাদের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির একজন সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা অপহরণের ঘটনা যারা রটিয়েছে আমরা তাদের সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহাজাহান আলী খান বলেন, ঘটনা সাজানো তার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে এর সাথে আরো কোন ব্যক্তি জড়িত কিনা সেটি তদন্তের জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ই সেপ্টেম্বর ৩০৬ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী মালা আক্তারের অপহরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মাসুদা আক্তারের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় ছাত্রী অপহরণের অভিযোগ ওঠে। মালা আক্তার বলইবুনিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সুলতান মিয়ার মেয়ে।