দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিল ও সরকার পতনের একদফা দাবিতে আগামী রোববার (১৯ নভেম্বর) থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি। রোববার ভোর ৬টা থেকে হরতাল চলবে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত।
আজ বৃহস্পতিবার দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে একবারও বিবেকের চাপ অনুভব করেননি? একতরফা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দিলেন।
মানুষ এই তফসিল প্রত্যাখান করেছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘এই কমিশন শেখ হাসিনার কথা ছাড়া একধাপ পা ফেলতে পারে না।’
জনগণ বিএনপির অবরোধ মেনে নিয়েছে, রাস্তায় নেমে এসেছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি দিয়ে জনগণকে আটকে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
এর আগে, গত সোমবার এক ভার্চ্যুয়াল কনফারেন্সে রিজভী পঞ্চম ধাপে বুধবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। যার আজ শেষ দিন।
গত ২৮ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা ও সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডাকে বিএনপি। সমাবেশ শুরুর আগেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় দলটির নেতা–কর্মীরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ বিএনপি কর্মীরা কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও জাজেস কমপ্লেক্সে হামলা চালায়। ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালেও।
বিএনপিকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য নিহত হন। আহত হন শতাধিক। এ সময় সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর ওপরও হামলা করা হয়। ভাংচুর করা হয় গণমাধ্যমের কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল।
ওই দিন সন্ধ্যায় রোববার সারা দেশে সকাল–সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। হরতালের মধ্যেও বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। তাদের কর্মসূচির সাথে মিল রেখে জামায়াতে ইসলামীও তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এরপর থেকে বিভিন্ন মেয়াদে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছে দলটি।
বিএনপি–জামায়াতের অবরোধের মধ্যে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে একশটিরও বেশি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে দলটির কোনো নেতাকর্মীকে মাঠে দেখা যায়নি। ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার ঘটনায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাইরে যারা আছেন তারাও প্রকাশ্যে আসছেন না।
২৮ অক্টোবরের পর থেকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়টিও তালাবদ্ধ। হরতাল–অবরোধের কর্মসূচিগুলো আসছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে।