রিনা খাতুন (৫৫)। করোনা উপসর্গ নিয়ে সোমবার (৬ জুলাই) রাতে ভর্তি হন যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে। নিয়মানুযায়ী তাকে করোনা ওয়ার্ডের ইয়োলো জোনে থাকার কথা। কিন্তু সেখানকার শয্যা তো দূরের কথা বারান্দায়ও জায়গা নেই। নিরুপায় হয়ে স্বজনরা তাকে করোনা ওয়ার্ডের বাইরে নমুনা সংগ্রহের জন্য রাখা টেবিলের উপর রাখেন।
মঙ্গলবার সকালে নমুনা সংগ্রহ শুরু হওয়ায় টেবিলের ওপর থেকে নামিয়ে গাছতলায় রাখা হয়। কথাগুলো জানালেন রিনা খাতুনের স্বামী আবদুল আজিজ। তাদের বাড়ি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বারবাগ গ্রামে।
শুধু রিনা খাতুন নয়, তার মতো করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহমেদ বলেন, করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগী বাড়ছেই। শয্যা বাড়িয়েও জায়গার সংকুলান হচ্ছে না। ফলে জায়গা না পেয়ে বারান্দা কিংবা গাছতলায় থাকার মতো ঘটনা ঘটছে। তবে আমরা ইয়োলো জোনের শয্যা ও জায়গা বৃদ্ধি করছি। আরও বাড়ানো প্রক্রিয়াধীন।
তিনি বলেন, করোনা ওয়ার্ডের রেড জোনে ১৪৬ শয্যার বিপরীতে ১৩৬ জন ও ইয়োলো জোনের ২২ শয্যার বিপরীতে ৯৯ জন রোগী ভর্তি আছেন।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে নতুন করে আরও ২৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহম্মেদ ও সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য কর্মকর্তা ড. রেহেনেওয়াজ জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার ৭৮২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার প্রায় ৪০ শতাংশ। নতুন করে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জন করোনা রোগী ছিলেন। বাকি ছয়জনের উপসর্গ ছিল। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে ২৩৫ জন।
এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৭৭৯ জন, সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৯ জন, করোনা পজিটিভ রোগী মারা গেছে ১৮১ জন। যশোর জেনারেল হাসপাতালে মারা গেছে ১২ জন, করোনা ও উপসর্গ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
যশোর সদর উপজেলায় পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে ৮৯ জন, কেশবপুরে ২৩ জন, ঝিকরগাছায় ৩৫ জন, অভয়নগরে ৮২ জন, মনিরামপুরে ১৯ জন, বাঘারপাড়ায় ১০ জন, শার্শায় ২৬ জন, চৌগাছা উপজেলায় ২৫ জন নতুন করে শনাক্ত হয়েছে।