তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আজমেরু এলাকায় কৃষিকাজে ব্যবহৃত সরকারি খাল দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাসরিন চৌধুরী তাৎক্ষণিক সেখানে অভিযান চালিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, মোস্তফাপুর ইউনিয়নের আজমেরু এলাকায় রাস্তার পাশের সরকারি খাল বা গোপাট দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন ফখরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।
খালটির অবস্থান মোকামবাজার অফিস বাজার সড়ক থেকে দক্ষিণ দিক হয়ে আজমেরু এলাকা হয়ে কোদালী ছড়া পর্যন্ত। প্রায় ৪০ বছর আগে গোপাট হিসেবে পরিচিত ছিল। পরে ওই গোপাটের পশ্চিম পাশে খাল খনন করে পূর্ব পাশ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। ওই খালের বেশ কিছু অংশ দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন ফখরুল ইসলামসহ আরও এক ব্যক্তি।
এ বিষয়ে স্থানীয় উপকারভোগী কয়েকজন কৃষক খাল দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করায় আপত্তি করেন। ফখরুল ইসলাম গংরা কৃষকদের আপত্তি তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক দ্রুত সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজ শুরু করেন।
পরে এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে কৃষক রাজু মিয়া গত (৩১ জানুয়ারি) বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে ওই দিন বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে একটি টিম সরেজমিন পরিদর্শন করে অবৈধভাবে খাল বা গোপাট দখলের সত্যতা পান। পরে তারা খাল বা গোপাটের ভূমি বাদ দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দেন।
উল্লেখ্য, ওই খালের উত্তর পাশে রাজু মিয়ার বাড়ির সীমানা ও দক্ষিণ পাশে শাহীন মিয়ার কৃষি জমির সীমানা রয়েছে। তারা সহ অন্যান্য কৃষি জমির মালিকদের খালের বাইরে তাদের সীমানার অবস্থান। দীর্ঘ দিন থেকে ওই খাল থেকে পানি সেচ দিয়ে কৃষি কাজ করে আসছেন এলাকাবাসী। তবে খালটি ভরাট হওয়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে খননের জন্য সম্প্রতি জেলা প্রশাসক বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষে একটি আবেদন করা হয়েছে। খালটি খনন হলে কৃষি কাজসহ ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
এ বিষয়ে ইউএনও নাসরিন চৌধুরী জানান, আজমেরু মৌজার গোপাটের সরকারি খাস ভূমিতে অবৈধ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ সংক্রান্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্তক্রমে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মোকামবাজার অফিসবাজার সড়কের প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের উত্তর পাশে সরকারি গাইড ওয়াল ও সড়ক দখল করে রিপন গাজী নামের জনৈক ব্যক্তি সুকৌশলে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। রিপন গাজী প্রথমে কৃষি জমিতে মাটি ভরাট করার সময় গাইড ওয়ালটির ওপর মাটি ফেলে তার দখলে নেন। তার ওপর বাঁশ ও কঞ্চি দিয়ে কিছু সবজি গাছ ও কচু লাগিয়ে আড়াল করেন। এরপর বাঁশের বেড়া দেন। সর্বশেষ তিনি কাঠ ও টিন দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে পুরো সরকারি গাইড ওয়াল ও রাস্তার ভূমি অবৈধভাবে নিজ দখলে নেন।
এ বিষয়ে গিয়াসনগর ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে মৌখিকভাবে এলাকাবাসী জানালে কোনও পদক্ষেপ এই পর্যন্ত নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফখরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে নারাজ।