
তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: দেশের ২৭ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দেশজুড়ে ভাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। আগামী রবিবার এই পরিস্থিতি থাকবে। এরপর গরমের তীব্রতা কমে আসবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর আগের দিন ১৭ জেলায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার তথ্য দিয়েছিল সংস্থাটি।
আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, বর্তমানে ঢাকা, টাঙ্গাইল, রাঙামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, চুয়াডাঙ্গা ও রংপুর বিভাগের আট জেলা, রাজশাহী বিভাগের আট জেলা ও সিলেট বিভাগের চার জেলাসহ মোট ২৭টি জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে আগামী রবিবার পর্যন্ত।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ের দিকে দেশে বৃষ্টিপাত কিছুটা বাড়তে পারে। এতে ভাপসা গরম কিছুটা কমে আসতে পারে। এখন তাপমাত্রা যতটুকু তার চেয়ে বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। কারণ বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি। অন্যদিকে সন্ধ্যায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, আজ চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, রংপুর ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বর্ষা মৌসুমের মধ্যভাগে এসেও চৈত্র-বৈশাখের মতো ভ্যাপসা গরমে নাকাল মৌলভীবাজারসহ প্রত্যেকটি উপজেলার মানুষ। তীব্র খরতাপে দুর্বিষহ জীবনযাত্রা। ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি, তার উপর করোনা আক্রান্তের সংখ্যাসহ ও বিভিন্ন পানিবাহিত রোগব্যাধি দেখা দিয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে রিকশা, ভ্যান চালকসহ খোলা আকাশের নিচে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষজন।
শুক্রবার মৌলভীবাজারে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একটু প্রশান্তির জন্য ফুটপাতে ঠান্ডা শরবত পান করছে সাধারণ মানুষ। গরমের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে শিশুরা পুকুর কিংবা খাল-বিলের পানিতে দিন পার করছে। গাছের ছায়া কিংবা শীতল স্থানে ছুটতে দেখা গেছে অনেককে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ভ্যাপসা গরমে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে কর্মজীবী মানুষজন। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
এদিকে তাপদাহ বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ঠান্ডা পানীয় পানের চাহিদা। ফুটপাতে বিক্রি করা লেবুর শরবত, আখের রস ও ফলমূল কিনে খাচ্ছেন অনেকে। একইসঙ্গে চাহিদা বেড়েছে ডাব ও কোমল পানীয়র।
কনফেকশনারী দোকানদাররা জানান, তীব্র গরমে কোমলপানীয়, জুস ও আইসক্রিম খুব বেশি চলছে। এছাড়া শহরের ইলেক্ট্রনিক্স দোকানগুলোতে পাখা বিক্রির ধুম লেগেছে।
এদিকে গত কয়েক দিন ধরে দেখা গেছে, দিন রাত-সমানতালে গরমের দাপট। অস্বাভাবিক দাবদাহের কারণে কুলাউড়ার অধিকাংশ ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বারে বাড়ছে রোগীর ভিড়।