দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করায় বিতর্কিত বক্তা মুফতি কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে তাকে এ দণ্ড দেওয়া হয়।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম জুলফিকারের আদালতে দোষ স্বীকার করেন তিনি।
গ্রেফতারের পর থেকে এ পর্যন্ত কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমের কারাভোগকেই সাজা হিসেবে প্রদান করেন আদালত। সে হিসেবে তার এক বছর তিন মাস ১৯ দিনের কারাভোগের সাজা হয়।
উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছিল।
এরপর ২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালমাটিয়ার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। হিসাব করলে দেখা যায়, গ্রেফতারের পর থেকে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তার এক বছর তিন মাস ১৯ দিনের কারাবাস হয়, যা দণ্ড হিসেবে প্রদান করেন আদালত।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, কাজী ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫/৩১/৩৫ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ ধারাগুলোর সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। যেহেতু তিনি দোষ স্বীকার করেছেন সেহেতু বিচারক সন্তুষ্ট হয়ে তার কারাভোগটাই সাজা হিসেবে দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, কাজী ইব্রাহিম তার বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল ও খুতবার সময় মিথ্যা-উসকানিমূলক ও ভীতিপ্রদর্শন সম্বলিত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করেন। প্রচারিত ভিডিও সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে উসকানিমূলক ভিডিওগুলোতে প্রচারিত বক্তব্য তার নিজের বলে স্বীকার করেন।
তিনি ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা, আক্রমণাত্মক ও ভীতি প্রদর্শনমূলক বিভিন্ন ভিডিও প্রচার এবং প্রকাশ করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫/৩১/৩৫ ধারায় অপরাধ করেছেন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়।
এরপর যখন তাকে গ্রেফতার করতে লালমাটিয়ার বাসায় যায় পুলিশ, তখন তিনি ফেসবুক লাইভে এসে ‘হিন্দুস্থানি দালাল ও র’র এজেন্ট তার বাসা ঘিরে রেখেছে বলে মন্তব্য করেন।
তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলাটি করেছিলেন ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মুন্সি আব্দুল লোকমান।
এ মামলায় তাকে আদালতে হাজির করে দুদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ড শেষে একই বছরের ২ অক্টোবর জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
তদন্ত শেষে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. হাসানুজ্জামান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।