মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন প্রোগ্রেসিভি পার্টি অব দ্য মালদ্বীপ (পিপিএম) এর নেতা মোহামেদ মইজ্জু। তিনি চীনপন্থী হিসেবে পরিচিত। গতকালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি ভারতপন্থী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহকে পরাজিত করেছেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল শনিবার মালদ্বীপে দ্বিতীয় দফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ৫৪ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বিরোধী নেতা মোহামেদ মইজ্জু। অন্যদিকে ৪৬ দশমিক ২৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ। ইতিমধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নতুন প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।
মালদ্বীপের রাজধানী মালের মেয়র ছিলেন মোহামেদ মইজ্জু। তিনি ‘ভারতকে বিদায় করো’ শ্লোগান দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছিলেন। কারণ ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ ভারতপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ। ওই দিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন মোহামেদ মুইজ্জু।
২০১৮ সাল থেকে মালদ্বীপের ক্ষমতায় ছিলেন করবেন ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ। ৬১ বছর বয়সী এই নেতা তাঁর শাসনামলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছিলেন। তাঁর পররাষ্ট্রনীতি ছিল ‘ভারত প্রথম’।
অন্যদিকে ৫১ বছর বয়সী নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার পক্ষে। এতদিন ভারতের প্রভাবাধীন ছিল মালদ্বীপ। মোহামেদ মুইজ্জু চান ভারতের প্রভাববলয় থেকে বেরিয়ে এসে চীনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলুক চীন।
সোলিহের আগে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মালদ্বীপের প্রসিডেন্ট ছিলেন আবদুল্লাহ ইয়ামিন। তাঁর মেয়াদের চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল মালদ্বীপ এবং চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে যোগ দিয়েছিল ওই সময়েই। মাঝখানে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভারতপন্থী নেতা সোলিহ প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর চীনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে মালদ্বীপের এবং ভারতের সঙ্গে সখ্য তৈরি হয়। এবার মোহামেদ মুইজ্জু নির্বাচিত হওয়ার পর আবার চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে যাচ্ছে মালদ্বীপের।
গত ৮ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রথম ধাপে কোনো প্রার্থী এককভাবে ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় এ নির্বাচন রানঅফে গড়ায়। ওই নির্বাচনে মুইজ্জু এককভাবে সর্বোচ্চ ৪৬ শতাংশের বেশি ভোট পান। অন্যদিকে, সোলিহ পান ৩৯ শতাংশ ভোট।
কে এই মোহামেদ মুইজ্জু
মোহামেদ মুইজ্জুর জন্ম ১৯৭৮ সালে। তিনি যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি করেছেন। ২০১২ সালে গৃহায়ণ মন্ত্রী হিসেবে মালদ্বীপের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন মোহামেদ মুইজ্জু।
সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের শাসনামলেও তিনি মন্ত্রী ছিলেন। সে সময় তিনি বেশ বড় বড় অবকাঠামোগত প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছিলেন। ২০২১ সালে তিনি মালের মেয়র নির্বাচিত হন।