একে একে নিজের চার সন্তানকে না খেয়ে অপুষ্টিতে মরতে দেখেছেন এক মা। আরেক সন্তানও মৃত্যুর পথে। ছোট্ট এই শিশুটিকে বাঁচাতে ৯০ কিলোমিটার পথ হেঁটে এই হাসপাতালে নিয়ে গেছেন তিনি। ওই নারী জানালেন, খাবারের অভাবে মৃত্যুর সাথে লড়ছে তার শিশুটি। ওকে বাঁচাতেই হাসপাতালে নিয়ে গেছেন তিনি।
এই চিত্র সোমালিয়ার। ভয়াবহ মানবিক সংকটে পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া। গেলো ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরায় ভুগছে পূর্ব আফ্রিকার দেশটি। তীব্র খরায় নষ্ট হয়েছে ফসল, মৃত্যু হয়েছে বহু গবাদি পশুর। চলমান রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব তো রয়েছেই। আর তাই খাদ্য সঙ্কটে ভুগছে দেশটির অন্তত ৭০ লাখ মানুষ। শিশুদের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। অপুষ্টিতে প্রতিদিনই শিশুদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। ভিড় বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। শুধু সোমালিয়াই নয়, কেনিয়া, ইথিওপিয়ার মতো আফ্রিকান দেশগুলোতেও দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা।
তীব্র খরায় খাদ্য সংকটে ভুগছে দেশটির লাখ লাখ মানুষ। ঘর-বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। সবচেয়ে বিপাকে শিশুরা। অপুষ্টি কেন্দ্রের চিকিৎসকরা বলছেন, গেলো পাঁচ মাসে হাসপাতালগুলোতে আশঙ্কাজনক হারে রোগী বেড়েছে। খরার কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে এখানে আসছে রোগীরা।
এদিকে, এরই মধ্যে ঘরছাড়া হয়েছে সোমালিয়ার লাখ লাখ বাসিন্দা। দূর-দূরান্ত থেকে বেঁচে থাকার আশায় রাজধানী মোগাদিসুতে ভিড় জমাচ্ছেন তারা। গাড়ি ভাড়ার অর্থও নাই কারও, তাই কেউ শত কিলোমিটার আবার কেউ কয়েক সপ্তাহ হেঁটেই আসছেন ক্যাম্পগুলোতে। তবে সেখানেও শান্তি মেলেনি, মানুষের চাপে ক্যাম্পেও কাটাতে হচ্ছে মানবেতর জীবন।
আশ্রিতরা বলছেন, অনেক আত্মীয় মারা গেছে তাদের। আরও অনেকে মৃত্যুর পথে। ঘরবাড়ি ছেড়ে তাই ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে তারা। ক্যাম্পের কর্মীরা সাহায্য করছে, তবে এখনও অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হচ্ছে তাদেরকে।
শুধু সোমালিয়াই নয়, চরম খরায় ভুগছে ইথিওপিয়া ও কেনিয়ার মতো আফ্রিকার দেশগুলো। এসব দেশেও অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে শিশুরা।