তিমির বনিক, মৌলভীবাজার থেকে: সেতুটি এমনিতে সরু এবং দূর্বল। একসঙ্গে দুই পাশের গাড়ি চলাচল করতে পারে না। এখন সেতুর রেলিং ভেঙে গেছে। সেতুর উত্তর পাশের একটি অংশ দেবে গেছে। সেখানে পাটাতন দিয়ে কার্পেটিং করা হলেও সেই পাটাতন ভেঙে গেছে। গাড়ি উঠলে সেতু কাঁপে। খুব ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীবাহী গাড়ি এই সেতু দিয়ে পার হয়।’
কথাগুলো বলছিলেন সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের লেগুনা চালক শরিফ মিয়া। এই সেতুর অবস্থান সিলেট-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক সড়কের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কটালপুর এলাকায়।
মেয়াদোত্তীর্ণ সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ‘সাবধান, ঝুঁকিপূর্ণ সরু সেতু, ধীরে চলুন’ লেখা সংবলিত সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দায় সেরেছে সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃপক্ষ। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন দূরপাল্লার অন্তত পাঁচ হাজার ছোট-বড় গাড়ি চলাচল করে আসছে। মৌলভীবাজার ও শ্রীমঙ্গলসহ সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগের এটিই অন্যতম একটি সড়ক।
জান যায়, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কটালপুর এলাকায় ‘চান মিয়ার খাল’ হিসেবে পরিচিত ওই খালের ওপর মেয়াদোত্তীর্ণ এই সেতুতে গেল কয়েক দিন আগে সেতুর টপস্লেব, গার্ডারে ফাটল ও সেতুর একটি অংশের পাটাতন ভেঙে গেলে তা কার্পেটিং করে মেরামত করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
ব্রিজের স্থানে পরিলক্ষিত খরে দেখা যায়, সেতুর একটি অংশে পাটাতন দেওয়া। সেতুর একপাশের রেলিং ভেঙে গেছে। দেবে গেছে উত্তর পাশের একটি অংশ। গাড়ি উঠলে সেতুটি কাঁপে। এ ছাড়া গাড়ি চলাচল করছে একপাশ দিয়ে। সড়ক দিয়ে চলাচলকারী কটালপুর বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াছিন (৪৫) বলেন, ‘সরু সেতুটি দ্রুত সংস্কার করে আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।’
মিনিবাস চালক সোহাগ আহমদ বলেন, ‘সেতুটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। কখন কি হয় বলাতো যায় না। সেতুর রেলিং ভেঙে পড়েছে ও এক পাশ দেবে গেছে। যেকোনো সময় দ্রুত গতির কোনো ওভারলোড করা গাড়ি আসলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মোটরবাইক চালক সঞ্জিত দাস এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি প্রতিদিন প্রায় আসা যাওয়া এই পথ দিয়ে ব্রিজের উপর হয়ে যেতে হয়। কিন্তু যাওয়া আসা করতে হবে বলে চলাচল করেন নয়তো এ ব্রিজের উপর উঠলে মনে হয় এখনি মনে হয় কোন দূর্ঘটনা ঘটতে চলছে। এমন পরিস্থিতিতে কতৃপক্ষের সুনজর না দিলে যে কোন সময় বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতে পারেন বলে জানান।
সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করার জন্য মন্ত্রণালয়ে নকশা (ডিজাইন) পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদন হলে টেন্ডারের মাধ্যমে পুরোনো এই সেতু ভেঙে নতুন একটি সেতু নির্মাণ করা হবে।’