বরিশাল জেলা প্রতিনিধিঃ বিলাঞ্চল ও খালে গুপ্ত ঘাতকের মত অবৈধ কারেন্ট, চায়না-দূয়ারী ও ভেসাল জাল মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে অসাধু মৎস্য শিকারীরা। এতে হুমকীর মূখে পরেছে দেশীয় প্রজাতীর মাছ সহ জীব-বৈচিত্র।
সরেজমিন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দেশীয় প্রজাতির মাছ নিধনের জন্য খাল-বিলের মধ্যে নিষিদ্ধ কারেন্ট, চায়না-দুয়ারী জাল, ভেসাল জাল, বাশের চাটাইয়ের ঘরায় চাই-বাইন্না দিয়ে নিধন করা হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছের পোনা সহ বিভিন্ন জলজ প্রানী। এমনকি সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত টেটা দিয়ে নিধন করা হচ্ছে দেশীয় প্রজাতীর মাছ।
এ বিষয়ে বরিশাল সরকারী ব্রজমোহন কলেজের প্রানীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ মতিয়ার রহমান জানান, অবৈধ জাল ব্যবহারের কারনে মাছের রেনু পোনা ধ্বংসের পাশাপাশি ৭০ প্রকার জলজ প্রাণী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফলে জীব-বৈচিত্র চরম হুমকি মূখে রয়েছে। পানিতে বসবাসকারী ছোট ছোট প্রানীগুলোকে বড় প্রানীরা খেয়ে বেঁচে থাকে। এখন ছোট প্রানীগুলো যদি ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে বড় প্রানীগুলোও ধ্বংস হয়ে যাবে। যার প্রভাব পরবে জনজীবনে। সহযোগী অধ্যাপক মতিয়ার রহমান আরও জানান, জীব-বৈচিত্র টিকিয়ে রাখতে হলে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। এজন্য যে আইন রয়েছে সেই আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি অবৈধ জাল উৎপাদনকারী কারখানাগুলো ধ্বংস করা হলে রক্ষা পাবে জীব-বৈচিত্র।
সচেতন নাগরিকদের মতে, দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রানী রক্ষায় জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলায় প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে কারেন্ট ও চায়না দূয়ারী জাল ধ্বংস করা হলেও গৌরনদী উপজেলায় বিগত দিনগুলোতে দৃশ্যমান কোন অভিযান পরিচালিত হয়নি। এমনকি হাট-বাজারগুলোতে অবৈধ জাল বিক্রি করা হলেও নেই কোন অভিযান।
গৌরনদী উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, দেশীয় প্রজাতীর মাছ রক্ষায় ২০২১ জুলাই থেকে ২০২২ জুন পর্যন্ত ১২টি অভিযান পরিচালনার নিয়ম রয়েছে। এ জন্য দেশীয় প্রজাতীর মাছ ও শামুক সংরক্ষন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রতি তিন মাস পরপর ১৪ হাজার একশ’ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সেই বরাদ্দের টাকা উত্তোলণ করা হয়েছে।
গৌরনদী উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ আবুল বাসার জানান, গত অর্থবছরে ১৪টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। শনিবার (২০ আগষ্ট) দুপুরে উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের মাগুরা স্ট্রিল ব্রীজ ও দোনারকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ হাজার মিটার অবৈধ জাল ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মৎস্য শিকারীদের সচেতন করে তোলার পাশাপাশি নানা মুখি পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, দেশীয় প্রজাতির মৎস্য সম্পদ রক্ষায় রক্ষায় জেলার প্রতিটা উপজেলায় অভিযান পরিচালনার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।