তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সম্প্রতি বন্যার্ত দুস্থ মানুষের জন্য ক্রয়কৃত শুকনা খাবার চিড়া, মুড়ি বিতরণ না করে উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ গুদাম থেকে প্রকল্প ব্যস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. তরিকুল ইসলাম তার মনোনীত অফিসের লোকজন দিয়ে বাজারে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন তৎক্ষনাৎ গরীব দুস্থ মানুষের বিতরণ করার নির্দেশনা থাকা সত্বেও তা অমান্য করে গুদামে মজুদ রেখে চিড়া মুড়ি বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করেছে।
গত বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) শ্রীমঙ্গলের সেন্টাল রোডের একটি দোকানে গিয়ে চিড়া ও মুড়ি বিক্রির সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে দোকান মালিকরা এসব গরীবের ত্রাণ সামগ্রী খাবার ক্রয় করতে চাননি। তারা জোরজবরদস্তি করে রেখে গেছেন। বিক্রি হলে তারা টাকা নিবেন বলে জানিয়ে যায়।
দোকান মালিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে বলেন, আমার দোকানে ৯ বস্তা মুড়ি রেখে গেছে। তবে চিড়া অন্যান্য দোকানে বিক্রি করেছে আমি তা রাখিনি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য উধ্বর্তনের কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুকনা খাবার চিড়া ও মুড়িসহ বিভিন্ন প্রকারের ত্রাণ সামগ্রী কেনা হয়েছিল। তার মধ্যে অধিকাংশই খাবার বিতরণ করা হয়নি। ফলে উপজেলার ত্রাণ গুদামে এসব খাদ্য সামগ্রী পড়ে রয়েছে। তারমধ্যে সিলেট জেলার একটি উপজেলার কিছু ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে ত্রাণ গুদামে।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, যেসব ত্রাণ সামগ্রী বিক্রি করা হয়েছে, সেগুলো আমাদের না, সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলার। আমরা বিক্রি করে তাদেরকে টাকা দিয়েছি। তারমধ্যে চিড়া ৩৫০ কেজি ও মুড়ি ৫০০ কেজি বিক্রি করা হয়েছে। এসব ত্রাণ সামগ্রী বন্যার সময় পাবনা থেকে কিনা হয়েছিল। তবে সরকারি ত্রাণ বিক্রির নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) কয়েক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও বিজি আছেন বিভিন্ন রকমের তালবাহানা করেন। আমতা আমতা করে শুধু তিনি বলতে থাকেন মিটিং আছে এ নিয়ে পরে কথা বলবো আর অফিসে আসেন চা পান করতে করতে সব তথ্য দিবো যা যা তথ্য প্রয়োজন কিন্তু অফিসে আসেন।
জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, আমার জানা মতে দুই বস্তা মুড়ি আছে অন্য একটি উপজেলার। এর বাইরে যদি মাল বিক্রি করে থাকে তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মৌলভীবাজার জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছাদু মিয়া জানান, সরকারি কোনো ত্রাণ সামগ্রী বিক্রি করার কোনো রকম নিয়ম নেই। সে কেমনে বিক্রি করে? আমি বুঝতেছি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন সত্যতা পাওয়া গেলে।