
সুজন কুমার কর্মকার, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় শহীদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুর ১২ টায় শহীদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আগ্রাসন বিরোধী দীর্ঘ লড়াইয়ে আবরার ফাহাদ একটি নতুন ধাপ সংযোজন করে দিয়ে গেছেন। আমরা সেই লড়াইটাকে তাকে সামনে রেখে চালু রাখতে চেয়েছি। আবরার ফাহাদ শুধু একটা নাম না। আগ্রাসন বিরোধী লড়াইয়ের একটি জার্নি। সেই জার্নির একটা অন্যতম অর্জন হচ্ছে জুলাই গণ অভ্যুত্থান। জুলাই গণ অভ্যুত্থানে এদেশের তরুনেরা জীবন দেওয়ার প্রেরণা পেয়েছে আবরার ফাহাদের থেকে। আগ্রাসন থেকে মুক্তির জন্য এদেশের তরুনেরা ঝাপিয়ে পড়ে রাজপথে। অবশেষে আমরা আগ্রাসী পরাশক্তির বাংলাদেশীয় সবচেয়ে বড় খুঁটি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ থেকে পালাতে বাধ্য করেছি। আসিফ মাহমুদ বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার আবরার ফাহাদের স্মৃতি মুছে দিতে চেয়েছিল। তারা কোন সংবাদ করতে দিত না, কর্মসূচী পালন করতে দিতো না। কর্মসূচী পালন করতে গেলে সেখানে হামলা হতো। জেল,জুলুমের শিকার হতে হতো। তিনি বলেন, যারা আত্মত্যাগ করে তাদের নাম মুছে ফেলা যায়না। এটি আবারও প্রমাণিত হলো। ২৪’এর গণ অভ্যুত্থানের পর এখন বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আবরার ফাহাদকে স্মরণ করে। আগ্রাসন বিরোধী প্রতিটি লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা হিসেবে থাকেন শহীদ আবারার ফাহাদ।
উপদেষ্টা আরো বলেন, ষড়যন্ত্র এখনো চলমান। নানা ছোটখাটো ইস্যুতে জনগণকে বিভক্ত করার, একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে পরাজিত শক্তি। নানা ধরনের উগ্রবাদীদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে দেশের পরিস্থিতি বিনষ্ট করার জন্য। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই এ ধরনের যেকোন প্রচেষ্টাকে অন্তবর্তীকালীন সরকার কঠোরভাবে দমন করবে।
স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন শহীদ আবরার ফাহাদের পিতা মো. বরকত উল্লাহ। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এনডিসি (যুগ্ম সচিব) আমিনুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।
জানাগেছে, ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত কুষ্টিয়া স্টেডিয়াম। ২০২০ সালে নাম পরিবর্তন করে করা হয় শেখ কামাল স্টেডিয়াম। এরপর পুরনো স্টেডিয়াম ভেঙে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়াম। বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যার পর স্টেডিয়ামটি তার নামে নামকরণের দাবি ওঠে। পরবর্তী সময়ে স্টেডিয়ামকে নতুন নামে নামকরণ করে বুয়েট ছাত্র শহীদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম করে সরকার। ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত খুলনা বিভাগের মধ্যে এক মাঠে দুই খেলার এটিই প্রথম স্টেডিয়াম।