ফোনে আড়িপাতা বন্ধ ও ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনার তদন্ত চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রেজা ই রাকিব।
এর আগে ১০ আগস্ট আড়িপাতা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটে নির্দেশনা চাওয়া হয় আড়িপাতা প্রতিরোধের নিশ্চয়তা ও ফাঁস হওয়া ঘটনাগুলো তদন্তের। ১০ আইনজীবীর পক্ষে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শিশির মনির এ রিট করেন।
তিনি বলেন, ২২ জুন এ বিষয়ে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় রিট করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয় ২০১৩-২১ সাল পর্যন্ত সংঘটিত ১৬টি আড়িপাতার ঘটনার বিষয়ে।
রিটে বলা হয়, দেশের সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী চিঠিপত্র ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা সংরক্ষণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে— ফোনে আড়িপাড়া ও ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা অহরহ ঘটছে। তাই এটি বন্ধ হওয়া প পা উচিত।
রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) বিবাদী করা হয়।
রিটকারী আইনজীবীরা হলেন- অ্যাডভোকেট রেজওয়ানা ফেরদৌস, অ্যাডভোকেট উত্তম কুমার বণিক, অ্যাডভোকেট শাহ নাবিলা কাশফী, অ্যাডভোকেট ফরহাদ আহমেদ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নওয়াব আলী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইবরাহিম খলিল, অ্যাডভোকেট মুস্তাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট জি এম মুজাহিদুর রহমান (মুন্না), অ্যাডভোকেট ইমরুল কায়েস ও অ্যাডভোকেট একরামুল কবির।
২২ জানুয়ারি ফোনে আড়ি পাতা বন্ধে ৭ দিনের মধ্যে পদক্ষেপ জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের এই ১০ আইনজীবী।
ফোনে আড়িপাতা ঠেকাতে আইন অনুযায়ী বিটিআরসির নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চেয়ে ২২ জুন কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তারা উকিল নোটিশ দিয়েছিলেন। জবাব না পেয়ে এ রিট আবেদন করা হয়।
রিট আবেদনে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩০ (১) (চ) ধারা এবং সংবিধানের ৩৯ ও ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল চাওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফোনালাপ, প্রয়াত আইনজীবী মওদুদ আহমদ ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসানের ফোনালাপ, ভিকারুননিসা নূন কলেজের অধ্যক্ষের ফোনালাপ, মামুনুল হকের ফোনালাপ, যশোর-৬ আসনের এমপি শাহীন চাকলাদারের ফোনালাপ, ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের ফোনালাপ, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনাও রিটে উল্লেখ করা হয়েছে।