ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে এবং দেশটিকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য করার দাবি জানিয়ে সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতভাবে গতকাল শুক্রবার (১০ মে) প্রতীকী ভোটের মাধ্যমে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা থেকে পূর্ণ সদস্য করার প্রচেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার মুখেই অনুষ্ঠিত হলো এই ভোটাভুটি। খবর এএফপির।
প্রতীকী এই ভোটাভুটির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত জিলাড এরডান। তবে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর এই উদ্যোগকে ঐতিহাসিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
গাজা যুদ্ধের তীব্রতা বাড়তে থাকার সময়ে গত এপ্রিল মাসে জাতিসংঘে ২০১১ সালের একটি প্রস্তাব নতুন করে উত্থাপন করে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। প্রস্তাবে ফিলিস্তিনকে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা থেকে পূর্ণ সদস্য করার কথা বলা হয়। আর এই প্রস্তাব কার্যকর করতে প্রয়োজন ছিল নিরাপত্তা পরিষদের সবুজ সংকেত ও সাধারণ পরিষদে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য দেশের সমর্থন। তবে নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতার অধিকারী পাঁচটি সদস্য দেশের একটি যুক্তরাষ্ট্র গত ১৮ এপ্রিল এই প্রস্তাব ঠেকিয়ে দেয়। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের বেশ সমালোচনাও হয়।
গতকাল শুক্রবার ভোটাভুটি শুরুর আগে ফিলিস্তিুনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর বলেন, ‘এই মঞ্চে আমি শতবারেরও বেশি দাঁড়িয়েছি, তবে কখনোই এমন গুরুত্বপূর্ণ ভোটের আগে নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’
রিয়াদ মানসুর আরও বলেন, ‘মুক্ত জাতি সম্প্রদায়ের মাঝে নিজেদের অধিকার নিয়ে দাঁড়াতে ফিলিস্তিনিদের জন্য দিন আসবেই।’
অন্যদিকে, ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত জিলাড এরডান বেশ ক্ষুব্ধভাবেই তার প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন। জাতিসংঘ সনদের প্রিন্ট করা কপি হাতে নিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সনদের অপব্যবহার করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির বাইরে কাউকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষপাতী নয় যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের অতি ডানপন্থি সরকার অবশ্য দ্বি-রাষ্ট্র নীতির ঘোরতরবিরোধী।
প্রস্তাবনাটি পাসের পর জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রদূত রবার্ট উড বলেন, ‘আমাদের ভোট ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে তুলে ধরে না।’
ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের অংশ হিসেবে পাস হওয়া এই প্রস্তাবনার ওপর প্রতীকী ভোটাভুটিতে ১৪৩টি দেশ ভোট দেয় পক্ষে, বিরোধিতা করে ৯টি দেশ আর ভোট দিতে বিরত থাকে ২৫টি দেশ।