ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ ফরিদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের উত্তর বাহিরদিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা’র নির্ধারিত মিটিং গত শনিবার বেলা তিন ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মিটিংয়ে মাদ্রাসার আয়/ ব্যয় হিসাব চায় উপস্থিত সাধারণ জনগণ। তখন অত্র মাদ্রাসার সভাপতি ও চাঁদপুর ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক “মোস্তফা মাতুব্বর” এর নেতৃত্বে সাধারণ জনগণের উপর হামলা করা হয়।
এখানে উল্লেখ্য যে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে সভাপতির বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে সাধারণ জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুললে ব্যপক সংঘর্ষ বেধে যায়। সুত্রে জানা যায় এই মাদ্রাসার প্রায় ১০ বছর যাবত মোস্তফা কামাল সভাপতির দায়ীত্ব পালন করে আসছে এবং মাদ্রাসার সকল ছাত্রসহ যাবতীয় ব্যায়ভার এলাকাবাসিই বহন করে আসছে।
এদিকে মাদ্রাসার সকল আর্থীক অনুদান সভাপতি বরাবর এলাকাবাসি প্রদান করলেও সেই অর্থের কোন আয়-ব্যায়ের হিসাব নিজের কাছেই গচ্ছিত রেখেছেন। দীর্ঘদিন ধরে সভাপতি মোস্তফা কামালের নিকট মাদ্রাসার সকল হিসাব চাইতে গেলে বিভিন্ন কথা বলে এড়িয়ে গিয়েছে। একপর্যায়ে গত ২৯ আগস্ট গ্রামবাসি সবাই মিলে পুনরায় মাদ্রাসার আয়-ব্যায়ের হিসাব চাইতে গেলে, কথা কাটা-কাটির একপর্যায়ে সভাপতি মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাব্বি, সাকিব, কামরুল ইসলাম, রেজাউল করিম, জাহাঙ্গীর, তারেক মুসুল্লী. সৈয়দ মুসুল্লী, জসিম, মজিদ, মজিবর, হুমায়ন, বেল্লাল, মিন্টুসহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জন মিলে অতর্কিত ভাবে গ্রামবাসির উপর বর্বর হামলা চালায়।
এসময় গ্রামবাসির পক্ষে এলেন শেখ (৩৫), ডালিম শেখ (৩৩), জালাল শেখ (৩৯), কবির মৃধা (৪৫), শরিফুল শেখ (১৯) কে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্বক জখম করে। এ ঘটনায় আহত ব্যাক্তিদের দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এছাড়াও গ্রামবাসির পক্ষে আরো অন্তত ২০ জনকে মারধোর করেছে সভাপতি মোস্তফা কামালের নেতৃত্তাধীন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীবর্গ এবং তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এঘটনায় সভাপতি মোসস্তফা কামালের পক্ষে ও অন্তত ৫ থেকে ৬ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য গত ২৯ শে আগস্ট এলেন শেখ গংরা প্রতিপক্ষের আঘাতে গুরুতর রক্তাত্ব জখম হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং প্রত্যেক ব্যাক্তি মাথা, হাতে, পায়, নাকে ১০ থেকে ১৫ টি করে সেলাই দেয়া হয়েছে।
আহতদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে এলেন শেখ এর অবস্থা আশংকাজনক হলে ৩ সেপ্টেম্বর বিকালে, পুনরায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে এলেন শেখ এর অসুস্থতার খবর পেয়ে এই প্রতিবেদক বিষয়টি জানতে হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, এলেন শেখ এর প্রতিপক্ষ মোস্তফা কামাল গং পুরোপুরি সুস্থ হলে ও তাদের কাউকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। এমনকি ২/১ জন আঘাতপ্রাপ্ত না হলেও তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে রাখা হয়েছে। এছারাও আহত এলেন গং রা জানান, হাসপাতাল থেকে তাদের বের করে দেয়ার জন্য বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ছাড়পত্র দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত তারেক মুসুল্লীর মুঠোফোনে বিষয়টি জানার জন্য একাধীকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই এব্যাপারে সুষ্ঠ তদন্ত পুর্বক মাদ্রাসার আয় ব্যায়ের হিসাব বুঝিয়ে দেয়াসহ এই বর্বরিচিত হামলার ঘটনায় জড়িতদের আটক করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসি। এলেন গংরা অসুস্থ অবস্থায় কেন ছাড়পত্র দেয়া হলো, বিষয়টি জানার জন্য এই প্রতিবেদক ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, এধরনের কোন অনিয়ম করে থাকলে, দরখাস্ত করলে তদন্ত পুর্বক ব্যাবস্থা নেয়া হবে।