লক্ষ্মীপুরে গোয়ালঘর থেকে শিমু আক্তার (২৩) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার ভোরে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামে হারিছ মাঝির বাড়ির গোয়ালঘর থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনার পর থেকে ওই গৃহবধূর শ্বশুর হারিছ মাঝি পলাতক রয়েছেন।
নিহত শিমুর পরিবারের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় জমায়।
নিহত শিমু উপজেলার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কুশাখালী গ্রামের সিরাজ মিয়ার মেয়ে।
শিমুর পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ৮ বছর আগে চরমনসা গ্রামের ওমান প্রবাসী আবুল বাশারের সঙ্গে শিমুর বিয়ে হয়।
তাদের সংসারে শাহাদাত হোসেন নামে ৬ বছরের ছেলে রয়েছে।
বিয়ের পর থেকেই শিমুর সঙ্গে প্রায়ই শ্বশুর হারিছ মাঝি, শাশুড়ি রহিমা বেগম, ননদ সুমি আক্তার, শাবনুর আক্তার ও শাহনাজ আক্তারের ঝগড়া লাগত। তাদের পরিবারে কলহ লেগেই থাকত।
অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতেও মোবাইল ফোনে পরিবারের লোকজন বাশারের কাছে শিমুর নামে নালিশ দেয়। এর আগে শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের অন্যরাও তাকে গালমন্দ করে। রাতেই বাশার শ্বশুর-শাশুড়িকে ফোন দিয়ে শিমুকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধমক দেয়। তার সঙ্গে আর সংসার করবেন না বলেও জানান তিনি।
ঝগড়ার কারণেই শিমুকে তার শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদরা হত্যা করে পরিকল্পিতভাবে গোয়ালঘরে ফাঁস লাগিয়ে রেখেছে বলে দাবি করে শিমুর পরিবার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিমুর মা বকুল বেগম বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এখন আত্মহত্যা বলে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
ছোট ননদ শাবনুর আক্তার বলেন, আমাদের সঙ্গে কোনো ঝগড়া হয়নি। রাতে একসঙ্গে খাবার খেয়ে ভাবি ঘুমাতে যান। ফজরের নামাজের সময় উঠে ভাবির ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়েছি। তিনি আত্মহত্যা করেছেন, পরে তার পরিবারকে আমরা খবর দিয়েছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আমিন মাঝি বলেন, ওই পরিবারে আগে থেকেই কলহ চলে আসছে। একাধিকবার আমি সালিশ করেছি। মৃত্যুর ঘটনা শুনে ঘটনাস্থল গিয়েছি। কলহের জের ধরেই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা বলতে পারছি না।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।