আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে পাবনার বেড়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
আহত ৩ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ৫টা থেকে থেমে থেমে এই সংঘর্ষ চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।
বেড়া পৌর এলাকার বৃশালিখা জাহাজঘাট এলাকায় বর্তমান পৌর মেয়র ও যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসিফ সামস রঞ্জন ও সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি আব্দুল বাতেনের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রঞ্জন ও বাতেন সম্পর্কে আপন চাচা-ভাতিজা। রঞ্জন পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর ছেলে ও বাতেন টুকুর ছোট ভাই।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় দশ বছর আগে বেড়া পৌর এলাকার বৃশালিখায় হুরাসাগর নদী তীরে অবৈধ নৌবন্দর গড়ে তোলেন তৎকালীন পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন। পরে বিআইডব্লিউটিএ নৌবন্দরটি উচ্ছেদ করলেও পরবর্তীতে আবারও অবৈধভাবে ঘাটটি চালু করেন আব্দুল বাতেন। নৌবন্দরের পাশে শতাধিক অবৈধ দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছিলেন বাতেন। নির্বাচনী বিরোধকে কেন্দ্র করে ঘাট ও দোকানপাট দখলে মরিয়া হয়ে ওঠেন বর্তমান মেয়র রঞ্জন সমর্থকরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে রঞ্জনের সমর্থকরা দোকানপাটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। খবর পেয়ে বাতেনের সমর্থকরা তালা ভেঙে দোকানপাট খোলার চেষ্টা করে।
এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়। বিক্ষুব্ধরা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। সংঘর্ষে ৫ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। এদের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান (২৪), রমজান আলী (৪০) ও সাবেরকে (৩২) বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, বাতেন ও রঞ্জন গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। গতকাল বিকেলে বৃশালিখা ঘাট এলাকায় দোকানপাট দখলকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষ মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হন। পুলিশ গাড়ি নিয়ে দ্রুত সেখানে পৌঁছালে, সাবেক মেয়র বাতেন গ্রুপের সমর্থকেরা পুলিশের গাড়িতে হামলা করে। এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বাতেনকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে সাবেক মেয়র আব্দুল বাতেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বর্তমান মেয়র অ্যাডভোকেট আসিফ রঞ্জন শামস বলেন, এখানে আওয়ামী লীগের কোনো গ্রুপ নেই। অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে ঘাট রক্ষায় এলাকাবাসী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উদ্যোগ নিয়েছে।