গাজায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর আগ্রাসন ও ফিলিস্তিনি নিরীহ জনগণকে নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে ইউরোপের দেশ পর্তুগালে পৃথক দু’টি বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির রাজধানী লিজবন ও বন্দরনগরী পর্তুতে এসব সমাবেশে স্থানীয় রাজনৈতিক দল পার্তিদো কমিউনিস্টা পর্তুগিজা (পিসিপি), পর্তুগালে জেনারেল কনফেডারেশন অব দ্য পর্তুগিজ ওয়ার্কার (সিজিটিপি) ও ব্লক এস্কেরদাসহ (বিই বাম ব্লক) আরো কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী নাগরিকও ছিলেন।
সমাবেশের জন্য নির্ধারিত সময় বিকেল ৬টার অনেক আগেই মাঠ ছিল লোকে লোকারণ্য। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফ্যাস্টুন। এতে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সহানুভূতি ও তাদের পাশে থাকার বার্তা ছিল স্পষ্ট। সমাবেশে উপস্থিত বাংলাদেশী নাগরিক মইনউদ্দিন আহমদ বলেন, গাজায় মানবাধিকার ভুলণ্ঠিত হচ্ছে। দখলদার ইসরাইলি বাহিনী একের পর এক বিমান ও বোমা হামলা চালাচ্ছে। অথচ বিশ্ব মোড়লেরা নিরব। তিনি তাদের ভূমিকার প্রতি ধিক্কার জানিয়ে অবিলম্বে ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের আরেক নাগরিক সাজিদুর রহমান বলেন, আমাদের সকলের নৈতিক ও ঈমানী দায়িত্ব হচ্ছে, এই আগ্রাসনের প্রতিবাদ করা। পর্তুগিজ নাগরিকরা মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোয় তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান।
রাজধানীর সমাবেশে বাম ব্লকের প্রধান ক্যাটারিনা মারটিন্স বলেন, ইসরাইল প্রতিদিনই অত্যাধুনিক মিসাইল নিক্ষেপ করে ফিলিস্তিনি বাড়িঘর গুড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, ইসরাইল ইতোমধ্যে গাজা উপত্যকায় অসংখ্য ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যার বেশিরভাগই শিশু। বিশ্ব গনমাধ্যম আলজাজিরা ও এপি কার্যালয়গুলোকে বোমা মেরে ধ্বংস করা হয়েছে। বিশ্বের সামনে গাজার আসল চিত্র যাতে প্রকাশ না পায় এর সব কিছুই করছে ইসরাইল। এ ধরনের সংঘাত পৃথিবীতে নজিরবিহীন।
তিনি আরো বলেন, এটি একটি অসম লড়াই। পাথরের বিপক্ষে মিসাইল। ইসরাইলি অত্যাধুনিক অ্যাডভান্সড টেকনোলজির জঙ্গী বিমানের বিপক্ষে ফিলিস্তিনিদের রকেট। ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল করে ইসরাইল রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। ইসরাইল একটি দখলদারী রাষ্ট্র, এটা কখনোই বৈধ হতে পারে না। ইসরাইল কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি মানে না। তারা মানে না কোনো সীমান্ত চুক্তিও। অবৈধ ইসরাইল গত ৭০ বছর ধরে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর গুড়িয়ে দিয়ে অবৈধ বসতি স্থাপন করেই যাচ্ছে।
পর্তগালের বাম শীর্ষনেতা ক্যাটারিনা মারটিন্স আরো বলেন, আমাদের অবস্থান ইহুদিদের বিরুদ্ধে নয়, ইসরাইলি রাষ্ট্রের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে। তাদের আগ্রাসন ও জবরদখলের বিরুদ্ধে।
ইসরাইল কখনোই সভ্য রাষ্ট্র হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সমাবেশে পর্তুগালে বসবাসরত বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি নাগরিক অংশগ্রহণ করেন। তাদের মুহূর্মুহূ শ্লোগানে সমাবেশ প্রানবন্ত হয়ে উঠে । সমাবেশ শেষে ফিলিস্তিনি জনগনের প্রতি সংহতি জানিয়ে তাদের দেশের সংগীত পরিবেশন করা হয় ।