ঢাকার ধামরাইয়ে প্রতিদিন দুধের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে সেবন করিয়ে স্লোপয়জনে স্বামীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্বামীর দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার হয়ে স্ত্রী এখন কারাগারে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বছর দেড়েক আগে ঢাকা জেলার ধামরাই পৌরশহরের আইনগণ মহল্লার মো. আব্দুর রশীদের মেয়ে আইরিন আক্তার মুক্তার সঙ্গে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার গোড়াই নাজিরপাড়া এলাকার মীর মোহাম্মদ মঈন হোসেন রাজীবের বিয়ে হয়। বছরখানেক তাদের দম্পত্য জীবন বেশ সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যেই কাটে। এরপর স্বামীর অগোচরে স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে বেশিরভাগ সময়ই পিত্রালয়ে অবস্থান করে। ফলে বাধ্য হয়ে স্বামী স্ত্রীর সান্নিধ্য পেতে শ্বশুরালয়ে যাতায়াত ও অবস্থান করে।
এ সুযোগে স্ত্রী কৌশলে স্বামীকে স্লোপয়জন করে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন দুধের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে খাওয়াতে থাকে। এতে স্বামী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে খবর পেয়ে ১৫ আগস্ট পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধরা পড়ে প্রত্যেক দিন দুধের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে সেবন করানোয় তার লিভার ৬০ ভাগ বিনষ্ট হয়ে গেছে।
ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়ার পর ওই স্বামী তার স্ত্রীর নামে থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার রাতে পুলিশ ওই গৃহবধূকে গ্রেফতার ও মামলার আলামত জব্দ করে। শনিবার দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছে বলে নিশ্চিত করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
মোহাম্মদ মঈন হোসেন রাজীব বলেন, বিয়ের পর কিছুদিন ভালো গেলেও পরে আমার স্ত্রী অন্য এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে; যা আমি তাৎক্ষণিক জানতে পারিনি। সে আমাকে স্লোপয়জনে হত্যার উদ্দেশ্যে দুধের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে সেবন করায়। যা ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নিশ্চিত হই। ফলে আমি থানায় মামলা দায়ের করি আমার স্ত্রীর নামে। এ মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠালে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।
আইরিনের বাবা আব্দুর রশীদ বলেন, আমার মেয়ে যে এমন সর্বনাশা খেলায় মেতে উঠেছে তা আগে বুঝতে পারিনি। আমি এতে খুবই দুঃখিত ও লজ্জিত। এতে আমার বলার কিছুই নেই।
ধামরাই থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান আতিক বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামিকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।