কিয়েভ শহর ঘেরাও করে রেখে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার আশায় বুচা শহর অতিক্রম করছিল রুশ বাহিনী।চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর দুই-তিন দিন পরের কথা।
ইউক্রেনীয় বাহিনী বুচা শহরের মধ্য দিয়ে কিয়েভ শহরের দিকে যাওয়া রুশ ট্যাঙ্ক এবং সামরিক সদস্যদের বহন করা গাড়ি ধ্বংস করে দিয়েছিল। এরপর রুশ বাহিনীর তাণ্ডবে বুচা শহরের রাস্তার উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে মানুষের দেহ।
পচা দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে গেছে সেখানকার। প্রায় জনমানবহীন শহরটির রাস্তায় শুধু মানুষের মরদেহ এবং ধ্বংস হয়ে যাওয়া ট্যাঙ্কার পড়ে আছে। চারিদিকে গোলাবারুদের দগদগে ক্ষত।
শহরটির মেয়র অ্যানাতোলি ফেদোরুক বলেছেন, নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে রুশ বাহিনী। ইতোমধ্যেই ২৮০ জনকে সমাহিত করা হয়েছে। শহরের রাস্তাগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে আরো বহু মানুষের দেহ। নিহতদের অধিকাংশই ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিক। নিহতদের মধ্যে শিশু-কিশোরও রয়েছে।
বুচা শহরের রাস্তায় কোনো কোনো গাড়িতে একই পরিবারের সবার নিথর, গুলিতে ঝাঁঝরা দেহ রয়েছে। রুশ বাহিনীর বুলেট তাদের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।
ফেদোরুক জনান, রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা নিহত ব্যক্তিদের হাতে সাদা ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল। তাঁরা যে নিরস্ত্র, রুশ বাহিনীকে সেই বার্তা দিয়ে নির্বিঘ্নে শহর ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন তারা।
রুশ বাহিনীও সেই ব্যান্ডেজ বাঁধার অর্থ বুঝেছিল। কিন্তু তার পরেও বেসামরিক নাগরিকদের রেহাই দেওয়া হয়নি। মরদেহগুলোর মাথার পিছনে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
ফেদোরুকের দাবি, নিরস্ত্র নাগরিকদের পিছন থেকে গুলি করে মেরেছে রুশ বাহিনী। বহু ইউক্রেনীয় বুচাঙ্কা নদী পেরিয়ে ইউক্রেন সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পালানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু রুশ বাহিনীর হামলায় সেই নদী পেরিয়ে জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
বুচা শহরের সবখানে একই চিত্র। যদিও শহরটির ঠিক কত সংখ্যক মানুষকে হত্যা করেছে রুশ বাহিনী, সেই সংখ্যা এখনো স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। সূত্র: বিবিসি।