তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর বাঁধ দিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীরা যুগ যুগ ধরে রাস্তা হিসাবে ব্যবহার করে আসছেন। বাঁধের উপরে সড়কে যানবাহন, পথচারী ও স্কুল-কলেজগামী হাজারো শিক্ষার্থীরা নিয়মিত যাতায়াত করছেন। অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বর্ষায় প্রবল স্রোতে ধলাই নদীর একাধিক স্থানে বাঁধ ধ্বসে পড়ছে।
উপজেলার চৈত্রঘাট এলাকার ধলাই নদীর ব্রীজের পশ্চিম উত্তরাংশে প্রায় দুইশ’ ফুট বাঁধ ধ্বসে পড়ায় তিন গ্রামের শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণের যাতায়াতে স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে বেরিয়ে আসা ৫৭ কি.মি. দীর্ঘ আঁকাবাঁকা ধলাই নদী কমলগঞ্জ উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মৌলভীবাজারে মনু নদীতে পতিত হয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে রাস্তাঘাট, ক্ষেতখামার ও বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি গুণতে হয়। নদীতে অসংখ্য বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে। তবে আঁকাবাঁকা থাকার কারণে বর্ষায় পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙ্গে গ্রামে পানি প্রবেশ করে। স্থানীয় একটি মহল নদীর দু’চারটি স্থানে লিজ নিয়ে নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে বালু উত্তোলন করার কারণেও হুমকির মুখে পড়েছে বেশকিছু বসতবাড়ি, নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ, ব্রিজ ও কৃষিজমি। এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয়রা নানা সময়ে প্রতিবাদ জানালেও কোন কাজে আসেনি।
সম্প্রতি সময়ে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের একাধিক স্থানে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। এসব ফাঁটলের কারণে বাঁধ নদীতে ধ্বসে পড়ছে। নদীর বাঁধকে কেন্দ্র করে স্থানীয় গ্রামবাসীরা যুগ যুগ ধরে যাতায়াতের রাস্তা হিসাবে ব্যবহার করে আসছেন। রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট আমেরতল থেকে দক্ষিণগ্রাম, বড়চেগ, পূর্ব দেওরাছড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা ব্রীজের পশ্চিম উত্তর পার্শ্বের বাঁধের উপর দিয়ে রাস্তা হিসাবে সুদীর্ঘকাল থেকে ব্যবহার করে আসছেন। বাঁধ ধ্বসে পড়ায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।
এলাকার প্রবাসী হাবিবুর রহমান, ব্যবসায়ী মঈনুদ্দীন, হারুনুর রশীদ, কলেজছাত্রী, জনি আক্তার, আল আমিন মিয়া জানান, ধলাইনদীর চৈত্রঘাট এলাকায় উত্তর পার্শ্বে তাদের যাতায়াতের বাঁধের সড়কে প্রায় দুইশ ফুট ধ্বসে পড়ায় বেশকিছুদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কোন যানবাহন নিয়ে যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেক দূর থেকে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও রোগীদের বেশি দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, চৈত্রঘাট এলাকায় নদীর ভেঙ্গে পড়া বাঁধ মেরামত করা হবে। তবে নদীর আরও বিভিন্ন স্থানে এভাবে বাঁধ ভাঙ্গা রয়েছে। সেগুলো মেরামতে অনুন্নয়ন রাজস্ব খাত থেকে বরাদ্ধ পাওয়া যায়নি। বরাদ্ধ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।