জাতীয় সংসদকে এখন রঙ্গশালায় পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোট কিংবা ভোটডাকাতি করে কিংবা যেভাবেই এমপিরা সংসদে প্রবেশ করুক; বাস্তবতা হচ্ছে— সংসদ অধিবেশন চলাকালে প্রতি মিনিটে রাষ্ট্রের ব্যয় প্রায় দুই লাখ টাকা।
সুতরাং যেখানে বন্যায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যাপীড়িত মানুষ যখন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে, বেঁচে থাকার লড়াই করছে, সেখানে রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে সংসদে বসে বসে এক শিল্পীর গান শোনা রীতিমতো মানবতার প্রতি অবমাননার শামিল।
তিনি বলেন, জনগণের দুঃখ-দুর্দশার দিকে নজর না দিয়ে সংসদে সেই শিল্পীর মুখে নিজের বন্দনা শুনে নিশিরাতের সরকারের প্রধানমন্ত্রী পুলকিত হলেও জনগণ লজ্জিত হয়েছে।
শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই— ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত নিশিরাতের গর্ভে যে সংসদের জন্ম দেওয়া হয়েছে, সেই সংসদকে এখন নতুন করে রঙ্গশালায় পরিবর্তন করেছেন। যে যার ইচ্ছেমতো গান, কবিতা, খিস্তিখেউর আর মিথ্যাচার চালিয়ে জনম্যান্ডেটহীন সংসদকে ইতোমধ্যে রঙ্গশালায় পরিণত করা হয়েছে।
সুতরাং সংসদ অধিবেশনের নামে গান, নাটক, কবিতা আর খিস্তিখেউর শোনার জন্য রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা খরচ না করে সেই টাকা বরং বন্যার্তদের পেছনে খরচ করা এখন সময়ের দাবি।
তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ এখন লুটেরা আর টাকা পাচারকারীদের দলে পরিণত হয়েছে। বিএনপি সম্পর্কে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করাই এই দলটির নেতা-মন্ত্রীদের এখন একমাত্র কাজ। ফলে এটি প্রমাণিত, বিএনপি এবং বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব সম্পর্কে মিথ্যাচারই নিশিরাতের সরকারের মন্ত্রী-এমপি হওয়ার একমাত্র যোগ্যতা।
রিজভী বলেন, বিনাভোটে বছরের পর বছর ধরে এমপি পদবি উপভোগ করার পর মমতাজ-নিক্সনদের মনে হয়তো নিশিরাতের সরকারের মন্ত্রী হওয়ার খায়েশ জেগেছে। কিন্তু তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বেশি লোভ ভালো নয়। রাষ্ট্রীয় টাকা খরচ করে সংসদে বসে এমন পাগলামি-খিস্তিখেউর অব্যাহত থাকলে সেদিন আর বেশি দূরে নয়, জনরোষ থেকে বাঁচতে পুরো নিশিরাতের সরকারকেই জনচক্ষুর অন্তরালে চলে যেতে হতে পারে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা ব্যস্ত থাকেন লুটপাট-অপকর্ম আর অপপ্রচারে। সরকার ব্যস্ত আখের গোছাতে। জনগণের টাকা দেদারসে লুটপাট করে একদল মানুষ রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। মানুষের ভাত-কাপড়ের অধিকার যেভাবে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, একইভাবে জনগণের ভোটের অধিকারকেও জাদুঘরে পাঠানো হয়েছে।