কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক মনে করেন, দেশে চালের দাম কিছুটা বেশি হলেও কোনও মানুষ অস্বস্তিতে নেই। তিনি বলেন, ‘চালের দাম বেশি হলেও কেউ না খেয়ে নেই। বছরের এ সময় আগে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতো। এখন কোনও মানুষ না খেয়ে নেই। বেশি দামে চাল কিনতে হলেও আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগণের মধ্যে কোনও অস্বস্তি নেই।’
বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২১ উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন মন্ত্রী। এর আয়োজন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন কৃষিমন্ত্রী। চালের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগে চালের দাম কম ছিল। কিন্তু তখন একদিনের আয় দিয়ে দরিদ্ররা তিন-চার কেজি চাল কিনতে পারতো না। এখন একদিনের আয়ের টাকায় ১০-১২ কেজি চাল কিনতে পারছেন তারা।’
ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের দৃষ্টিতে, ‘দেশে দ্রুত জনসংখ্যা বাড়ছে। প্রতি বছর দেশে ২৪ লাখ মানুষ বাড়ছে। বিশ্বের বহু দেশের মোট জনসংখ্যাই এতো নয়। তার ওপর আমাদের কৃষি জমি কমছে। তবুও আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি।’
চালের দাম বেড়ে যাওয়ার বড় কারণ হিসেবে নন-হিউম্যান কনজাম্পশনকে দুষছেন কৃষিমন্ত্রী। তার কথায়, ‘আমাদের উৎপাদিত চাল বহুক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে। মানুষ গরু ও ছাগলকে চাল খাওয়াচ্ছে। মৎস্য, পোল্ট্রি, হাঁসের খামারে ধান-চাল ও বাই-প্রোডাক্ট ব্যবহার হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কত চাল নন-হিউম্যান কনজাম্পশনে যাচ্ছে সেই হিসাব নেই।’
সবজিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বাজার ব্যবস্থাপনার দায় দেখেন মন্ত্রী, ‘আমি দেখেছি, যেখানে ফুলকপি চাষ হচ্ছে সেখানে তা বেচাকেনা চলছে ১০-১৫ টাকায়। কিন্তু ঢাকায় আনার পর একই জিনিসের দাম হয়ে যায় ৪০-৫০ টাকা। কারণ রাস্তায় চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। বাজার সিন্ডিকেটের দখলে। তাই হাত ঘুরে ঘুরে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এর মূল কারণ দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনা। এ নিয়ে কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্টদের।’
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম এবং এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন।