তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: ভারতে রপ্তানি আয় বাড়াতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন কেন্দ্রকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে পদক্ষেপ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। চলছে এর সম্ভাব্যতা যাচাই। ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ সম্প্রতি এই শুল্ক স্টেশন পরিদর্শন করে যান।
স্থল বন্দর সূত্র জানায়, কুলাউড়ার চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর করতে বিদ্যমান সুবিধা-অসুবিধা জানার জন্যই সচিবের এই পরিদর্শন। স্বাধীনতার আগে থেকেই কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর সীমান্তে অবস্থিত এই স্থল শুল্ক্ক স্টেশন ও অভিবাসন কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। সীমান্তের ওপারে রয়েছে ভারতের কৈলাশহর হয়ে আগরতলা। প্রথমে এই সীমান্ত হয়ে বৈধ পথে দুই দেশে লোকজন পারাপার শুরু হয়। পরে শুরু হয় পণ্য আমদানি-রপ্তানি। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক সামগ্রী, মাছ, শুঁটকি, সিমেন্টসহ বেশ কয়েকটি পণ্য ভারতে যায়। পাশাপাশি ভারত থেকে সাতকড়া, আদাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশকিছু পণ্য বাংলাদেশে আসে।
দেশীয় রপ্তানিকারকরা জানান, এই স্থল শুল্ক স্টেশন হয়ে আমদানির চেয়ে ভারতে রপ্তানি পণ্যই বেশি যায়। অবশ্য যোগাযোগ ও অবকাঠামো সমস্যা বিদ্যমান ছিল অনেক দিন। এমনকি বাংলাদেশি পণ্যবাহী গাড়িগুলো সীমান্তে আসার পর প্রথমে মালপত্র বাংলাদেশের জিরো পয়েন্টে আনলোড করা হতো। পরে ভারতীয় ট্রাক এসে সেসব পণ্য সীমান্তের অভ্যন্তর থেকে নিয়ে যেত। ফলে বাড়তি অর্থ আর সময় ব্যয় করতে হতো ব্যবসায়ীদের। ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতেন আমদানি-রপ্তানিকারকরা। যে কারণে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন কেন্দ্রকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর করার দাবি জানান তারা।
আমদানি-রপ্তানিকারক কর্মকর্তা পার্থ চৌধুরী জানান, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি কমাতে গত এপ্রিল মাস থেকে এই স্থল শুল্ক স্টেশন হয়ে সব ধরনের পণ্য ভারতে সরাসরি রপ্তানি শুরু হয়। বাংলাদেশি পণ্যবাহী ট্রাক ও ট্যাঙ্কলরিগুলো সরাসরি ভারতে প্রবেশ করতে শুরু করে। পাশাপাশি ভারতীয় পণ্যবাহী গাড়িগুলোও সরাসরি বাংলাদেশে আসছে। গত আগস্ট মাস থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয় থেকে জ্বালানি তেল নিয়ে ভারতীয় তেলবাহী ট্যাঙ্কগুলো বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যাওয়া-আসা শুরু করে।
সংশ্নিষ্ট সূত্র মতে জানিয়েছে, ভারতে তেলবাহী ট্যাঙ্ক যাওয়া শুরু হওয়ার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর করার বিষয়ে নড়েচড়ে বসে বানিজ্য মন্ত্রনালয়। এরই ধারাবাহিকতায় চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর করার সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই শুরু হয়।
কুলাউড়া নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুর রহমান খোন্দকার জানান, সিনিয়র বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর করার বিষয়ে করণীয় নিয়ে সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে আলোচনাও করেন।